আফগানিস্তান আবারও প্রক্সি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা!

মার্কিন সৈন্য
মার্কিন সৈন্য | ছবি: সংগৃহীত
0

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিলে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বেগে পড়ে যাবে আফগানিস্তানসহ মধ্য এশিয়ার ৫টি প্রতিবেশী দেশ। আল জাজিরার বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, বাগরাম যুক্তরাষ্ট্রের দখলে চলে গেলে মার্কিন সেনাদের উপস্থিতিতে মধ্য এশিয়ার ওই দেশগুলোতে আবারও শুরু হতে পারে গোয়েন্দা অভিযান, সৃষ্টি করতে পারে আঞ্চলিক অস্থিরতা, এমনকি আবারও একটি প্রক্সি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হতে পারে আফগানিস্তান।

গেল ১৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যে সফরকালে সংবাদ সম্মেলনে আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটির প্রসঙ্গ তোলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এরপর ২০ সেপ্টেম্বর ট্রুথ সোশ্যলে দেয়া পোস্টে ট্রাম্প দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র নির্মিত ওই ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ মার্কিন সেনাদের ফিরিয়ে না দিলে, এর পরিণতি খারাপ হবে।

যদিও বাগরাম ফেরত পাওয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের বক্তব্য নাকচ করে দেয় আফগানিস্তানের তালেবান সরকার। বিপরীতে ওয়াশিংটন দাবি করে, চীনকে মোকাবিলার জন্য ঘাঁটিটি ফিরে পেতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে এই বিমানঘাঁটি নিয়ে কেন উঠেপড়ে লেগেছেন ট্রাম্প। বিশেষ করে, আগের মেয়াদে নির্বাচনি প্রচারে বাগরাম দখল নিয়ে সোচ্চার ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

আরও পড়ুন:

বাগরাম বিমানঘাঁটির সঙ্গে জড়িত আছে মধ্য এশিয়ার নিরাপত্তা ইস্যু। মধ্য এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি ইউরেশিয়ার রাজনীতিতে বড় বদল আনতে পারে এমন আশঙ্কাও জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

বিশেষ করে গেল ৭ অক্টোবর রাশিয়ায় 'মস্কো ফরমেট কনসালটেশন অন আফগানিস্তান'-এ আলোচনার মূল এজেন্ডার একটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে কেমন হতে পারে আফগানিস্তানের নতুন কূটনৈতিক কাঠামো।

যেখানে আফগানিস্তান ছাড়াও উপস্থিত ছিল ভারত, ইরান, কাজাখস্তান, পাকিস্তান, রাশিয়া, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান ও বেলারুশের প্রতিনিধি।

মস্কো ফরমেটের ৭ম অধিবেশন থেকে স্পষ্ট বার্তা দেয়া হয়, কোনোভাবেই আফগানিস্তানে ভিনদেশি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন সমর্থন করবে না তালেবান সরকারের মিত্র শক্তিরা। কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও আফগানিস্তান- ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আঞ্চলিক রাজনীতিতে বিশেষ সুবিধা পায় এই ৬ দেশ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সেখানে বাগরাম ঘাঁটিতে মার্কিন সেনা উপস্থিতির কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে মধ্য এশিয়ার আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা।

ট্রাম্প নিশ্চিতভাবেই জানেন তালেবান সরকার এই প্রস্তাব কোনোভাবেই মানবে না। বিশ্লেষকরা বলছেন, তবুও এই ঝুঁকি নেয়ার কারণ চীন। বাগরাম ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ থাকলে প্রয়োজনে চীনের পরমাণু স্থাপনায় সরাসরি হামলা করার সুযোগ থাকবে ওয়াশিংটনের।

যদিও বিশ্লেষকদের দাবি, ট্রাম্পের এই আকাঙ্ক্ষা কোনোভাবেই মেনে নেবে না মধ্য এশিয়ায় তালেবান সরকারের মিত্র শক্তিরা। আর নিজস্ব স্বার্থের কারণে বাগরাম ইস্যুতে তালেবান সরকারকে কূটনৈতিক সহায়তা দিতে পারে রাশিয়া, ভারত, ইরান।

সেজু