শোকেসে সাজানো মোবাইল, ল্যাপটপসহ ব্যবহারের বিভিন্ন জিনিসপত্র। আগের মতই ঘরে আছে বিছানা ও পড়ার টেবিল। শুধু নেই আবরার ফাহাদ। এক এক করে কেটেছে ৬ বছর। ছেলের ব্যবহৃত জিনিসপত্রসহ অনেক স্মৃতি আঁকড়ে ধরে কোন রকম বেঁচে আছেন মা রোকেয়া খাতুন ও বাবা বরকত উল্লাহ। সন্তানের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা মনে হলেই শিউরে ওঠেন এখনও।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর নিজ হাতে খাওয়ানোর পর কুষ্টিয়া থেকে বাসে তুলে দিয়েছিলেন বুয়েটের উদ্দেশ্যে। ওই দিনটায় ছিল আবরারের সঙ্গে মায়ের শেষ দেখা। সেই বিদায় যে সন্তানের শেষ বিদায় হবে, তা তখনও অজানা ছিল মা রোকেয়া খাতুনের।
সেদিন রাতেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বুয়েট ক্যাম্পাসের শেরেবাংলা হলে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা করে আবরার ফাহাদকে। মৃত্যুর ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও ছেলে হত্যার বিচারের রায় কার্যকর না হওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। রয়েছে সন্তানের হত্যায় জড়িতদের পলিয়ে যাওয়ার আক্ষেপও।
আরও পড়ুন:
আবরার ফাহাদের বাবা মো. বরকত উল্লাহ বলেন, ‘আমরা এখনও সুষ্ঠু বিচার পাইনি। আপিল বিভাগে এখনও মামলাটি বিচারাধীন আছে। আমরা সরকারের কাছে আবেদন করবো বিচার কাজটি অতিদ্রুত শেষ করা হয়। দেশের সেরা বিদ্যাপীঠে পড়ে সে যে এভাবে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হবে তা আমরা আশা করিনি।’
দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় কুষ্টিয়াবাসীকে। আবরার ফাহাদ হত্যার সঙ্গে জড়িত পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত রায় কার্যকর করার দাবি তাদের। ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি গ্রন্থাগার।
স্থানীয়দের একজন বলেন, ‘আবরার ফাহাদ আমাদের কুষ্টিয়ার গর্ব। তার মৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাহত।’ শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি গ্রন্থাগার সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘ছেলেটিকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ নিষ্ঠুরতম অপরাধে করার পরও নিহতের পরিবার এখনও এর সুষ্ঠু বিচার পায়নি।’
পরিবার, এলাকাবাসী থেকে দেশের সর্বস্তরের মানুষের হৃদয়েই বেঁচে থাকবেন আবরার ফাহাদ, তার সাহস আর আপোষহীনতার কারণে।




