২০২২ সালে পেরুর প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসেন দিনা বলুয়ার্তে। সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জন, চাঁদাবাজি, সহিংসতাসহ বহু অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগও আছে। সম্প্রতি নিজের বেতন দ্বিগুণ বাড়িয়েছেন ৬৩ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে। তার জনপ্রিয়তা ঠেকেছে মাত্র আড়াই শতাংশে।
গেল ২০ সেপ্টেম্বর পেনশন ব্যবস্থায় সংস্কার আনে পেরু সরকার। যেখানে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সব পেরুবাসীকে পেনশনের আওতায় আনা বাধ্যতামূলক করা হয়। তরুণদের অভিযোগ, জনমত না নিয়ে এ সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে সরকার। এর ফলে অর্থনৈতিক চাপ পড়েছে অনেকের ওপর।
মূলত এর জেরেই গেল সপ্তাহে আন্দোলনে নামে দেশটির তরুণ প্রজন্ম। রাজধানী লিমায় সড়ক দখল করে জেন-জিরা। পরে প্রেসিডেন্ট ও সংসদ ভবন ঘেরাও করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষে আহত হয় বেশ কয়েকজন। আন্দোলন রূপ নেয় সহিংসতায়।
জেন-জিদের ডাকা এ বিক্ষোভে যোগ দেয় বিরোধী দলসহ সাধারণ মানুষ। দেশটির সরকার এবং সংসদের ওপর দীর্ঘদিনের ক্ষোভ এখন রূপ নিয়েছে বড় আন্দোলনে। প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তেকে ক্ষমতাচ্যুত না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় বিক্ষোভকারীরা।
আরও পড়ুন:
পেরুর জনসংখ্যার ২৭ শতাংশ জনগোষ্ঠীর বয়স ১৮ থেকে ২৯ বছর। দেশটির দারিদ্রের হার ৩০ শতাংশের বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া ও নেপালের পর জেনজিদের বিক্ষোভের প্রভাব পড়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুতে। দুর্নীতিবাজ শাসকদের হাত থেকে মুক্তি চায় সাধারণ মানুষ।
প্রিন্সেটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জো-মারি বার্ট বলেন, ‘তরুণরা এখন খুব বেশি সচেতন। ক্ষমতাসীন জোটগুলো নিজেদের স্বার্থে দেশ শাসন করছে। যেখানে সাধারণ জনগণের স্বার্থের করা তারা চিন্তা করে না। প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নানা বিষয়ে জনসাধারণের আস্থা হারাতে থাকে। যার ফলে দেশটিতে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ছে।’
২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ছয়জন প্রেসিডেন্ট পরিবর্তন হয়েছে পেরুতে। যাদের মধ্যে তিনজনই এখন কারাগারে। প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালের জুলাইয়ে।





