দশভুজা বাড়ির মন্দিরে প্রতিমা গড়তে ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পী নিরঞ্জন চন্দ্র পাল। প্রায় চার দশক ধরে তিনি প্রতিমা নির্মাণ করছেন। তার হাতে গড়া প্রতিমাই সাজায় দুর্গাপুরের পূজামণ্ডপ। তবে খরচ বেড়ে যাওয়া এখন বড় সংকট। নিরঞ্জন বলেন, ‘আগে একটি প্রতিমা তৈরিতে খরচ হতো চার-পাঁচ হাজার টাকা। এখন সেই খরচ দাঁড়িয়েছে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায়।’
ডিজাইন, অলংকার ও সাজসজ্জার খরচই বাড়িয়েছে এই চাপ। নতুন কারিগরের অভাবও প্রতিমা গড়ার কাজে সময় বাড়িয়ে দিচ্ছে।
দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, ব্যবসা-বাণিজ্যেরও বড় খাত। প্রতিমা ছাড়াও বাঁশ, ডেকোরেশন সামগ্রী, আলোকসজ্জা; সবখানেই জমজমাট বাজার। কলমাকান্দার উব্দাখালী নদীর পাড়ে বাঁশের হাটে প্রতিদিন ভিড় বাড়ছে। পাশের জেলা থেকে আসছে ক্রেতারা। ডেকোরেটর ব্যবসায়ীরাও ব্যস্ত শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জায়।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ জানায়, এবার জেলার ১০টি উপজেলায় ৫১৩টি মণ্ডপে পূজা হবে, যা গেল বছরের চেয়ে ৪৮টি বেশি। প্রতিটি মণ্ডপে পাঁচ থেকে দশ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হবে। সব মিলিয়ে জেলায় মোট খরচ হবে প্রায় ৩০ কোটি টাকার বেশি।
আরও পড়ুন:
পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লিটন চন্দ্র পণ্ডিত বলেন, ‘আনন্দ, উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়েই এ বছর পূজা উদযাপিত হবে। প্রশাসনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে প্রতিটি মণ্ডপ মনিটর করা হচ্ছে।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) হাফিজুল ইসলাম জানান, দুর্গম এলাকায় অবস্থিত পূজামণ্ডপে ফিক্সড নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। অন্য মণ্ডপগুলোতে মোবাইল টহল ও সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
ভক্তরা বিশ্বাস করেন, এবার দেবী দুর্গা কৈলাস থেকে মর্ত্যে আসবেন হাতির পিঠে চড়ে এবং ফিরবেন দোলনায়। যুগে যুগে দেবী অশুভ শক্তির বিনাশ করে সত্য ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা করবেন।
ঐতিহ্য আর আনন্দঘন আবহে তাই নেত্রকোণার দুর্গাপুরে শুরু হয়েছে শারদোৎসবের রঙিন আয়োজন; যেখানে ধর্ম, সংস্কৃতি ও বাণিজ্য মিলেমিশে গড়ে উঠেছে পূর্ণতা।





