স্বীকৃতির পরও বাস্তব পদক্ষেপ চান ফিলিস্তিনিরা

ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে সমাবেশ
ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে সমাবেশ | ছবি: এখন টিভি
0

ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশের ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়াকে যথেষ্ট মনে করছেন না প্রতিবেশী দেশে শরণার্থী হওয়া ফিলিস্তিনিরা। ইসরাইলের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে তাদের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে। অধিকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরা এর মধ্য দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার আশায় আছেন। বিশ্লেষকদের মতে, রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ফিলিস্তিনি আত্মরক্ষার অধিকারকে শক্তিশালী করবে। এদিকে, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে সমাবেশ করেছেন বাসিন্দারা।

এবারের জাতিসংঘ সম্মেলনে বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে ফিলিস্তিন সংকট। বিশ্বনেতারা জোর দিচ্ছেন দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের ওপর। সেই লক্ষ্যেই ইউরোপসহ শক্তিশালী দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বাধার মুখেও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে। এতে করে ইসরাইলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে।

লেবানন, জর্ডান ও সিরিয়ার বিভিন্ন শহরে থাকা ফিলিস্তিনি শরণার্থীরা বলছেন, শুধু রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়ে কিছুই হবে না। গাজায় গণহত্যা বন্ধে ইসরাইলকে চাপ দিতে হবে। তা না হলে তাদের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে।

ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের একজন বলেন, ‘গণহত্যার জন্য ইসরাইলকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত। রাষ্ট্রের স্বীকৃতির বিষয়টি বড় অর্জন।’

অন্য আরেকজন শরণার্থী বলেন, ‘এখন আমাদের দেখার বিষয় ইসরাইল কী প্রতিক্রিয়া দেখায়। নেতানিয়াহুর যেকোনো পদক্ষেপ ঠেকাতে আমরা প্রস্তুত।’

পশ্চিমা দেশগুলোর স্বীকৃতির সমর্থনে ফিলিস্তিনিরা সমাবেশ করেছে অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লাহ শহরে। জাতিসংঘের চার ভাগের তিন ভাগ দেশের স্বীকৃতিকে স্বাগত জানিয়েছে এ অঞ্চলের ফিলিস্তিনিরা। তাদের মতে, দেরিতে হলেও এ স্বীকৃতি শান্তি প্রতিষ্ঠায় কিছুটা কাজ করবে।

আরও পড়ুন:

সমাবেশে অংশ নেয়া এক ফিলিস্তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির জন্য দেশগুলোর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। তবে কেবল মৌখিক স্বীকৃতি নয়, ইসরাইলিদের হত্যা ও নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।’

তবে বিশ্লেষকদের মতে, এসব দেশের স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফিলিস্তিনিদের অবস্থান আরও দৃঢ় করবে। আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার নিশ্চিত হবে ফিলিস্তিনিদের। প্রায় ৪০টি দেশের কনস্যুলেট বা প্রতিনিধি অফিস থাকলেও ফিলিস্তিনিদের সেগুলোতে প্রবেশাধিকার সীমিত।

আল-কুদস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সালালদেহ বলেন, ‘প্রভাবশালী দেশগুলোর স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফিলিস্তিরিদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইনি ভূমিকা পালন করবে। ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ অধিকারকে সমর্থন ও বাস্তবায়নে প্রভাব রাখবে। তাদের মধ্যে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার বাড়বে।’

এদিকে, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যে। এ সময় দুটি দল ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের পতাকা হাতে বিক্ষোভ করে। একপক্ষ ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রের স্বীকৃতিকে স্বাগত জানালেও, অন্যপক্ষ বলছে এতে করে হামাসকে সমর্থন দেয়া হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ান এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার মতে এটি রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা। এ স্বীকৃতির মাধ্যমে দুর্ভাগ্যজনকভাবে হামাসকে সমর্থন করা হয়েছে।’

ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের সিটি হলে ফিলিস্তিনি পতাকা উত্তোলন করেন বাসিন্দারা। যদিও শহর কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না নেয়ার অভিযোগে ২৫ মিনিট পর পতাকা নামিয়ে ফেলা হয়।

এফএস