ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাজ্যের স্বীকৃতি; ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি কি বন্ধ হবে?

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাজ্যের স্বীকৃতি
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাজ্যের স্বীকৃতি | ছবি: সংগৃহীত
0

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাজ্যের স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। এতে আনন্দিত ব্রিটেনের মুসলিম কমিউনিটির সদস্যরা। বিশিষ্টজনরা বলছেন, এটি কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত হলেও, বন্ধ করতে হবে ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি। তবে এ স্বীকৃতি যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনবাসীর জন্য কতটুকু উপকার বয়ে আনবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

চলতি বছরের জুলাইয়ে বন্ধু রাষ্ট্র ইসরাইলকে যুদ্ধ থামাতে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছিল যুক্তরাজ্য। কিন্তু তাতে কান দেয়নি তেল আবিব।

সম্প্রতি ফিলিস্তিনের পক্ষে যুক্তরাজ্যে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে। ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বেশ প্রভাব ফেলে ব্রিটিশ রাজনীতিতে ।

চলতি বছরের জুলাইয়ে প্যালেস্টাইন একশন গ্রুপ নিষিদ্ধের পর থেকে মাত্র দুই মাসে বিক্ষোভ থেকে আটক হয় ১৬ শতাধিক সমর্থক।

এমন প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিলো যুক্তরাজ্য। সরকারের এ পদক্ষেপে আনন্দিত সাধারণ মানুষ। 

যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের প্রবাসীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এই ধরনের বর্বর হামলায় দীর্ঘদিন যাবৎ সহায়তা করে আসছিল, এটা বন্ধ হোক, সেটা আমরা চাই।পাশাপাশি আজকে প্রধানমন্ত্রী যে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দিলেন, সেটা আমাদের জন্য সুসংবাদ।’

আরেকজন বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধ না হলেও ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডা যে স্বীকৃতি দিলো, এটা যারা ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্যকাজ করেছেন তাদের জন্য স্বস্তির।’

আরও পড়ুন:

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইসরাইল রাষ্ট্র গঠনে ভূমিকা ছিলো ব্রিটেনের। এরপর দীর্ঘকাল ইসরাইলের মিত্র হিসেবে ভূমিকা রেখে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশিষ্টজনরা বলছেন, আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি ব্রিটিশ পররাষ্ট্রনীতিতে বড় পরিবর্তন।

লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, ‘ফিলিস্তিনকে স্টেট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, এটা অনেক আগেই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অন্তত তারা যে দিয়েছে, এর জন্য তাদের ধন্যবাদ। আর্মস বিক্রি যদি বন্ধ না হয়, তাহলে শুধু প্রতীকী স্বীকৃতি দিয়ে বাস্তবে কোনো পরিবর্তন আসবে না।’

ইউকে ইসলাম চ্যানেল বাংলার সিনিয়র প্রডিউসার কামাল মেহেদী বলেন, ‘ইসরাইল যখন গাজায় হামলা শুরু করে তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে একটা ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছিল। সেটা কাভার আপ দেয়ার জন্য এ স্বীকৃতি হতে পারে। প্রশ্ন হলো, আপনি এ স্বাধীনতা কাকে দিলেন, কোথায় এ পতাকা উড়বে? সেখানে তো কেউ নেই।’

১০৮ বছর আগে তৎকালীন ব্রিটেনের দখলে ছিল ফিলিস্তিন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার বেলফোরের ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে সেখানে ইসরাইলিদের বসবাসের সুযোগ করে দেন। 

মাত্র ৬৭ শব্দের এক টুকরো কাগজ মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসকে এভাবে বদলে দেবে কেউ কখনো ভাবেনি। ইতিহাসের পালাবদলে সেই ব্রিটেন ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিলো।

এসএইচ