হামাসের সাথে বন্দিবিনিময় চুক্তি কার্যকরে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন থেমেছে ঠিকই। কিন্তু, এতদিনের বর্বর হামলায় স্বপ্নের বসত-ভিটা ধুলোর সঙ্গে মিশিয়ে যাওয়ায় জীবনযুদ্ধের এক কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি বাসিন্দারা।
গাজা বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ এতো রক্তপাতের মধ্যেও বেঁচে আছি। বাড়িতে ফিরে এসেছি, তবে সব ধ্বংস হয়ে গেছে, কিছুই নেই। এই দৃশ্য ভাষায় বর্ণনা করা যায় না।’
এই জীবনযুদ্ধে নানামুখী সংকটে ডুবে থাকা ২৩ লাখ গাজাবাসীর সবার আগে প্রয়োজন খাদ্য, সুপেয় পানি, জ্বালানি, ওষুধ ও চিকিৎসার নিশ্চয়তা। যুদ্ধবিরতির আওতায় সীমান্ত অতিক্রম করে গাজায় প্রবেশ করছে খাবার, ওষুধ, জ্বালানিসহ মানবিক সহায়তার আওতায় থাকা নানা পণ্য বোঝাই ৬শ' ট্রাক। পর্যায়ক্রমে যা ৮শ'তে গিয়ে পৌঁছাবে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় গাজায় এই ত্রাণ যথেষ্ট নয় বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। আর তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আরও সহায়তার আহ্বান তাদের।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘গাজায় আসা ট্রাকগুলো যথেষ্ট নয়। প্রতিদিন যদি ২০০০ ট্রাকও আসে তাও গাজাবাসীর দুর্ভোগ শেষ হবে না। আমরা আশা করি সব আরব দেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই কঠিন সময়ে আমাদের সহায়তা করবে।’
আরেকজন বলেন, ‘আমরা এই সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞ। তবে আমাদের সবচেয়ে বড় চাওয়া যুদ্ধবিরতি যেন স্থায়ী হয়।’
মৃত্যুপুরীতে রূপ নেয়া নগরীতে যখন স্বপ্নকে নতুন করে সাজানোর পথে লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা, ঠিক তখনই সব জিম্মি ইসরাইলিকে বুঝে না পাওয়া পর্যন্ত গাজায় অভিযান বন্ধ হবে না বলে হুমকি দিলেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, ‘আমরা সব জিম্মির ফিরে আসার অপেক্ষায় আছি। তারা সবাই মুক্ত হয়ে না ফেরা পর্যন্ত আমরা যুদ্ধ বন্ধ করবো না।’
এদিকে যুদ্ধের সব লক্ষ্য পূরণ হয়নি দাবি করে, এখন বন্দিবিনিময়ের শর্তে যুদ্ধবিরতিতে যাওয়া ঠিক হয়নি বলে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন ইসরাইলি অর্থমন্ত্রী।
ইসরাইলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, আমরা এই বিপজ্জনক চুক্তিটি বন্ধ করতে পারিনি। কিন্তু জোর দিয়েছিলাম। বলেছিলাম আমরা যুদ্ধের সব লক্ষ্য পূরণ না করে থামবো না। হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে হবে। কিছুতেই শত্রুদের উল্লাস করতে দেয়া যাবে না।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত চালানো ইসরাইলি আগ্রাসন প্রাণ গেছে ৪৬ হাজার ৮শ'র বেশি নিরীহ ফিলিস্তিনির।