প্রগতি সরণীর যানজট পুরোনো। তবে সম্প্রতি তা রূপ নিয়েছে অসহনীয় দুর্ভোগে, যার অন্যতম কারণ দেশের প্রথম পাতাল রেল এমআরটি লাইন-১। স্টেশন নির্মাণের জন্য পরিষেবা লাইনের প্রতিস্থাপনের কাজ চলছে রাস্তার দু'পাশ দিয়ে।
পূর্বাচল আর এয়ারপোর্ট, এই দু'দিক থেকে আসা পাতাল আর এলিভেটেড অংশ যেখানে মিলিত হবে সেই ট্রানজেকশন পয়েন্ট হয়ে নদ্দা, নতুন বাজার অংশের স্টেশনের পরিষেবা লাইনের প্রতিস্থাপনের কাজ এখনও চলমান। আর এ কারণে বসুন্ধরা গেইটের দু'প্রান্ত কুড়িল আর নদ্দার দিক থেকে আসা যানবাহনগুলোর জট লেগেই থাকে।
একজন পথচারী বলেন, ‘প্রতিদিনই এই জ্যাম। আমাদের কষ্টের শেষ নেই। অন্য সময়ও জ্যাম থাকতো। তখন ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট লাগতো। এখন এক থেকে দেড় ঘণ্টার মতো লাগে।’
এমআরটি লাইন-১ এর প্রকল্প পরিচালক আবুল কাশেম ভূঁইয়া বলছেন, সিপি-৫ প্যাকেজের পরিষেবা লাইনের প্রতিস্থাপনের কাজ চলতি মাসেই শেষ হবে। কিন্তু ভোগান্তি কি শেষ হবে? কারণ ওপেন কাট পদ্ধতিতে স্টেশন নির্মাণে শুরু হলে সাময়িকভাবে বন্ধ হতে পাড়ে সড়ক।
আবুল কাশেম ভূঁইয়া বলেন, ‘নতুন বাজার থেকে নদ্দা হয়ে ট্রানজিশন পয়েন্ট জোয়ার সাহারা পর্যন্ত, জানুয়ারি পর্যন্ত টার্গেট ছিল। কিন্তু সপ্তাহ খানেক বেশি সময় লাগতে পারে।’
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল হক বলেন, ‘প্রগতি সরণি রাস্তাটা কিন্তু অত্যন্ত সংকীর্ণ। যদিও এটি ছয় লেনের তবুও তার আশেপাশে ভূমি ব্যবহারের ঘনত্ব যে পরিমাণে সেজন্য এখানে অনেক যানজট হবে।’
এমআরটি লাইন-১ এর প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ ভূগর্ভস্থ রুটে থাকবে ১২টি স্টেশন। আর প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড পূর্বাচল রুটে একটি ভূগর্ভস্থসহ থাকবে নয়টি স্টেশন।
টানেল বোরিং মেশিন বা টিবিএম এর মাধ্যমে মাটির ১০ থেকে ১২ মিটার নিচে চলবে খনন কাজ। প্রতিদিন ৮ থেকে ১২ মিটার মাটি খনন করে এগিয়ে যাবে মেশিনটি। তবে, গুরুত্বপূর্ণ এই টিবিএম এখনও কেনা হয়নি। তাই, প্রকল্প পরিচালকের কাছে এখন টেলিভিশনের প্রশ্ন ছিল, কতদূর এগোল সেই প্রক্রিয়া? আর যাত্রীসেবাই বা শুরু হতে পারে কবে থেকে?
এমআরটি লাইন-১ এর প্রকল্প পরিচালক আবুল কাশেম ভূঁইয়া বলেন, ‘বর্তমানে নেগোসিয়েশন চলমান অবস্থায় আছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এটা সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। এখানে মোটামুটি ডিজাইন আর ম্যানুফ্যাকচার এক বছর সময় লাগার কথা। সত্য কথা বলতে আন্ডারগ্রাউন্ড প্যাকেজগুলোর মেয়াদ পাঁচ বছর হয়। সে হিসেব করে জানুয়ারি ২০২৫ থেকে চালু হতে সে সময় লাগবে।’
স্বয়ংক্রিয় মেট্রোরেলের পরিচালনা কিংবা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অগ্রাধিকারের আওতায় ছিল ডিপো তৈরির কাজ। প্রায় ৯০ একর জায়গায় উঁচু নিচু অংশ বালি দিয়ে ভরাট করে কাজের অগ্রগতি প্রায় ৯০ শতাংশ। এখন বালুর স্তর শক্ত করার সাথে চলছে রোলার আর গ্রেডার দিয়ে সমান করার কাজ।
এমআরটি লাইন-১ এর উপ প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মোমেনুল ইসলাম মৃধা বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি যেন আগামী আগস্টের আগেই সিপি-০২ কনট্রাক্ট প্যাকেজের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সে চেষ্টা আমাদের পক্ষ থেকে থাকবে।’