সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক। যুক্তরাজ্যে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির বর্তমান নগরমন্ত্রী ও জাতীয় কোষাগারে অর্থ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন গেলো বছর থেকে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ হাউজ অব কমন্সের হ্যাম্পস্টিড ও হাইগেট আসনে ২০১৫ সাল থেকে টানা চতুর্থবারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তিনি।
গেলো ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গোপনে দেশত্যাগের পর থেকে নানা ঘটনাপ্রবাহের ধারাবাহিকতায়, হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে, ব্রিটিশ নাগরিক টিউলিপের নাম জড়ায় বিভিন্ন ইস্যুতে।
বিশেষ করে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশের অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প থেকে ব্রিটিশ মুদ্রায় ৩৯০ কোটি পাউন্ডের সমপরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ অভিযোগের তদন্তেও জড়িয়েছেন টিউলিপ।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতেই যুক্তরাজ্যে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে ৪৩ বছর বয়সী পার্লামেন্ট সদস্য টিউলিপকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি ব্যাডনোচ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে নিজ অ্যাকাউন্ট থেকে শনিবার মধ্যরাতে এ সংক্রান্ত দু'টি পোস্ট দেন তিনি।
কেমি ব্যাডনোচের অভিযোগ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ব্যক্তিগত বন্ধুত্বের জায়গা থেকে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে এমন একজনকে নিয়োগ দিয়েছেন, যিনি নিজেই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত। ব্রিটিশ কোষাগারের অর্থ সচিব হিসেবে দেশের আর্থিক অপরাধ, অর্থ পাচার ও অবৈধ লেনদেন দমনের দায়িত্বে নিয়োজিত টিউলিপ। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে।
লন্ডনে শেখ হাসিনার মালিকানাধীন বাড়িতে থাকতেন বলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে টিউলিপের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তার মতে, টিউলিপের ব্যবহৃত বাড়ি ও সম্পত্তির উৎস খতিয়ে দেখা উচিত। যুক্তরাজ্যের সাপ্তাহিক সংবাদপত্র সানডে টাইমসকে ইউনূস আরও বলেন, সহজ ভাষায় ডাকাতির মাধ্যমে অর্জিত হলে সেসব সম্পত্তি বাংলাদেশ সরকারকে ফিরিয়ে দিতে হবে টিউলিপের।
তবে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন লেবার পার্টির নেতা। নিজের সাফাইয়ে ব্রিটিশ সরকারকে চিঠিও দিয়েছেন তিনি। টিউলিপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা হবে এবং প্রয়োজনে আরও তদন্তের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে ডাউনিং স্ট্রিট।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার জানিয়েছেন, নিজের মন্ত্রীর ওপর তার পূর্ণ আস্থা আছে এবং তদন্তে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে টিউলিপ পূর্ণ দায়িত্বের পরিচয় দিয়েছেন।