মেঘনা পাড়ে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের এই কর্মব্যস্ততা নিত্যদিনের। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে ধান বেচাকেনা। হাওরাঞ্চল থেকে নৌকায় করে ধান এনে এখানে বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। যা দেশের পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ধানের মোকাম হিসেবে পরিচিত। মূলত জেলার চালকলগুলোতে ধানের যোগান দেয় শতবর্ষী এই মোকাম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়াও নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও হবিগঞ্জসহ হাওর বেষ্টিত ধানও আসে এখানে। মৌসুম চলাকালে দিনে কেনাবেচা হয় অন্তত ১ লাখ মণ ধান। তবে, বছরের অন্য সময় ধানের সরবরাহ নামে অর্ধেকে। তখন চাহিদা মেটাতে দেশের অন্য মোকামগুলো থেকে ধান সংগ্রহ করেন স্থানীয় চালকল মালিকরা।
মেঘনার ভিওসি ঘাটের এই মোকাম ঘিরে জেলায় গড়ে উঠেছে প্রায় ৩শ' চালকল। মোকাম থেকে চালকল পর্যন্ত ধান সরবরাহের জন্য জমজমাট পরিবহন ব্যবসাও। এতে কর্মসংস্থান হয়েছে হাজারো শ্রমিকের। তবে, ঘাটে কোনো জেটি না থাকায় ধান নামাতে লাগে দীর্ঘ সময়। এছাড়া ভালো আবাসন না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় দূরদূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীদের।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধানের মোকাম ঘিরে বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্যের ফলে আশুগঞ্জ এখন পুরো জেলার অর্থনীতির প্রাণ। মোকাম সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন হলে অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে।
এদিকে আশুগঞ্জ নৌবন্দরে আধুনিক কার্গো টার্মিনাল তৈরি ও মোকামের জন্য আলাদা জেটি নির্মাণের কথা জানায় স্থানীয় প্রশাসন।
আশুগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাক বলেন, ‘জেটি আধুনিকায়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ কার্যক্রম শেষে আমাদের যদি আরো এক্সটেনশন দরকার হয় সেক্ষেত্রে তা আবার পরিকল্পনার মধ্যে আনা যাবে।’
আশুগঞ্জ মোকামে প্রতিদিন অন্তত ৫ কোটি টাকার ধান কেনাবেচা হয়। মৌসুমে যা দ্বিগুণ হয়। আর জেলার চালকলগুলো থেকে প্রতিদিন অন্তত ১০ কোটি টাকার চাল পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন এলাকায়।