হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার কলেজ শিক্ষক জামাল উদ্দিন ছোট ভাইকে ইতালি পাঠানোর সকল প্রস্তুতি শেষ করে অপেক্ষা করছেন ব্যাংক থেকে জমানো টাকা তোলার। কিন্তু ১৫ দিন ধরে ইউনিয়ন ব্যাংকের বাহুবল শাখায় ঘুরেও তুলতে পারছেন না টাকা। এতে ছোট ভাইয়ের স্বপ্নপূরণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তার।
একই চিত্র আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংকসহ বেসরকারি অধিকাংশ ব্যাংকেরই। অর্থ সংকটে সঞ্চিত টাকা তুলতে না পেরে হতাশা নিয়েই ফিরতে হচ্ছে আমানতকারীদের। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও কৃষিখাতে।
ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থানীয় থেকে কেন্দ্রীয় শাখায় অতিরিক্ত টাকা স্থানান্তর এবং স্থানীয় পর্যায়ে ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলোর অনীহা এই সংকটের অন্যতম কারণ। এতে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে হাত পাততে হচ্ছে কেন্দ্রীয় শাখায়।
বাহুবল ইউনিয়ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মোজাক্কির হোসেন বলেন, ‘আমাদের এখানে কিন্তু আর টাকা জমা হয় না, গ্রাহকরা যদি টাকা জমা না দিয়ে, সবাই একসঙ্গে উত্তোলন করেন সেক্ষেত্রে কিন্তু কোনো ব্যাংকই একবারে টাকা দিতে পারবে না। এছাড়া অনেক অঞ্চলের ব্যাংক আছে যেখানে ডিপোজিট কম, তবে বিনিয়োগ বেশি, সেক্ষেত্রে ওসব ব্যাংক তখন হেড অফিস থেকে টাকা নিয়েও কিন্তু বিনিয়োগ করে থাকে। এর কারণ বিনিয়োগের নির্দিষ্ট একটা এরিয়া রয়েছে।’
হবিগঞ্জের ন্যাশনাল ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ন্যাশনাল ব্যাংকে সমস্যা দেখা দিলেও তার প্রভাবে কিন্তু অন্যান্য ব্যাংকের ওপর আস্থা গ্রাহকদের কমে গিয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। তবে সেটা দিয়ে যখন আমরা গ্রাহকদের সেবা আবারও দেয়া শুরু করব, তখন হয়তো ব্যাংকিং খাতের ওপর আস্থা আবার ফেরত আসবে।’
এই সংকটের জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবহেলাকে দুষছেন গ্রাহক ও ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা। পরিস্থিতি উন্নয়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপ চান তারা।