জেলা সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৩ সালে কালীগঙ্গা নদীর উপর নির্মিত ৬৬৪ মিটার দীর্ঘ তরা সেতু। গেল বছরের এপ্রিল মাসে সেতুর চারটি এক্সপানশন জয়েন্টের মেরামত করা হয়। প্রয়োজনীয় মালামালের সংকটের কারণে দু'টি বড় জয়েন্টের সংস্কার কাজ স্থগিত থাকে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত দু'টি এক্সপানশন জয়েন্টের স্টিলের পাতগুলো ভেঙে গেছে এবং বেশ কয়েকটি স্থানে ফাঁকা তৈরি হয়েছে। ভারি যানবাহন চলাচলের সময় প্রচণ্ড শব্দ ও কম্পনের সৃষ্টি হয়। ছোট যানবাহন বিশেষত মোটরসাইকেল ও থ্রি-হুইলার চালকদের জন্য সেতু পারাপার হয়ে উঠেছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
বাস চালক আলী হোসেন বলেন, 'প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে তিন থেকে চারবার যাতায়াত করতে হয়। দু'টি এক্সপানশন জয়েন্টের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যদি আগেই সবগুলো জয়েন্টের মেরামত করা হতো, তাহলে এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না।'
ট্রাকচালক আলমগীর বলেন, 'লোডেড গাড়ি নিয়ে সেতুর উপর দিয়ে চলাচলের সময় বেশ ভয় লাগে। কারণ একটু এদিক-ওদিক হলেই বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেতুটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে। এই সেতুতে সমস্যা হলে গোটা দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।'
মোটরসাইকেল চালক রাশেদুর রহমান জানান, 'ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে রাস্তা উচু-নিচু। মোটরসাইকেল নিয়ে চলাচল খুবই সমস্যা। আর তরা সেতুর দু'টি এক্সপানশন জয়েন্ট ভেঙে যাওয়ায় ঝাঁকুনি আরও বেশি অনুভূত হয়। প্রতিদিন এই সেতু পার হতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।'
সড়ক ও জনপথ বিভাগের মানিকগঞ্জের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল কাদের জিলানী বলেন, 'বছরের পর বছর ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে সেতুর এক্সপানশন জয়েন্টের স্টিলের পাতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গেল বছরের এপ্রিল মাসে দুটি এক্সপানশন জয়েন্ট বাদে বাকিগুলোর মেরামত সম্পন্ন করা হয়েছিল। অবশিষ্ট দু'টি জয়েন্টের সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।'
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তরা সেতুর এই সমস্যাটি দ্রুত সমাধান করা জরুরি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।