ক্রিকেটের সেরা শিল্পীদের একজন প্যাট কামিন্স। যাই করেন তাই হয়ে ছন্দময় অর্জনে হয়ে যায় সেরা। ১৭ বছরে অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে বিগব্যাশ ম্যাচে তাসমানিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামেন নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে। ২৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে প্রথম ম্যাচেই সাড়া ফেলেন প্যাট কামিন্স।
২০১০/১১ মৌসুমে ৬ ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে বিগব্যাশে হন সিরিজ সেরা খেলোয়াড়। টি-টোয়েন্টি অভিষেকে ২৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে নজর কাড়েন নির্বাচকদের। ডাক পান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে। অভিষেক টেস্টেও বাজিমাত ৭ উইকেট নিয়ে হন ম্যাচ সেরা।
২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়ার কনিষ্ঠতম পেসার হিসেবে অভিষেক তাঁর। একজন প্রতিশ্রুতিশীল বোলার হলেও ক্যারিয়ারের শুরুটা ছিলো ইনজুরি জর্জরিত। পিঠের স্ট্রেস ফ্র্যাকচার সেরে ২০১৫ অ্যাশেজে রায়ান হ্যারিসের বদলি হিসেবে দলে অন্তর্ভুক্ত হলেও খেলার সুযোগ পাননি। ৫ বছরের বেশি অপেক্ষার পর মিচেল স্টার্ক ইনজুরিতে পড়লে আবার সুযোগ মেলে জাতীয় দলে। এরপর শুরু হয় কামিন্সের গল্প।
২০১৯ সালে অ্যাশেজ সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট নিয়ে পান অস্ট্রেলিয়ার সেরা অ্যালান বর্ডার মেডেল। ২০২০ সালে নির্বাচিত হন আইসিসি বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটার। একই বছর অন্তর্ভুক্ত হন উইজডেন ক্রিকেটারদের তালিকায় ও।
আইপিএলের ১৩তম আসরে সাড়ে ১৫ কোটি টাকা দিয়ে তাকে কিনে নেয় কেকেআর। ২০২১-২২ মৌসুমে অ্যাশেজ সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক নির্বাচিত হন কামিন্স। তাঁর নেতৃত্বে অ্যাশেজ জয়ের পাশাপাশি পাকিস্তানকেও হারায় অজিরা। ২০২৩ সালে জিতেছেন ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও টেস্ট চ্যাম্পিয়ন শিপের মুকুট।
৬৬ টেস্ট ২২.৫৪ গড়ে নিয়েছেন ২৮৯ উইকেট। ৫ উইকেট ১৩ বার,১০ উইকেট ২ বার। সেরা ২৩ রানে ৬ উইকেট। ওয়ানডেতে ৯০ ম্যাচে ২৮.৭৮ গড়ে নিয়েছেন ১৪৩ উইকেট। ক্যারিয়ার সেরা ৭০ রানে ৫ উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে ২৩.৫৭ গড়ে ৫৭ ম্যাচে নিয়েছেন ৬৬ উইকেট।
চলমান বর্ডার গাভাস্কার ট্রফিতেও দেখালেন নিজের মুন্সিয়ানা। সিরিজ যখন ১-১ এ সমতা তখনই ব্যাট বলে অস্ট্রেলিয়ার ত্রাতা হয়ে এলেন প্যাত্রিক জেমস কামিন্স। ২ ইনিংসেই ব্যাট বলে অলরাউন্ড পারফর্ম করে শুধু ম্যাচ সেরাই হননি অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকে।
চিরাচরিত খুনে মেজাজি কিংবা কিছুটা নাক উঁচু স্বভাবের অস্ট্রেলিয়ান না হলেও নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে জাত চিনিয়েছেন সবসময়। ক্যারিয়ারের পুরো সময় জুড়েই ইমপ্যাক্ট বোলার হিসেবে অস্ট্রেলিয়াকে এনে দিয়েছেন নানা সাফল্য। একজন প্যাট কামিন্স যেন একজন জাত অস্ট্রেলিয়ানের প্রতিচ্ছবি। সম্মান ও সমীহ দুটোই যার সমার্থক।