টানা ১৪ মাস ধরে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা ৪৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। যাদের মধ্যে ১৭ হাজারের বেশি শিশু। আহতের সংখ্যা লাখের ওপর। এখনো নিখোঁজ ১১ হাজার মানুষ, বাস্তুচ্যুত কয়েক লাখ। ইসরাইলি হামলায় বাদ যায়নি গাজা উপত্যকার মসজিদ, স্কুল, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন, এমনকি শরণার্থী শিবিরও।
নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে বাসিন্দাদের ঠাঁই হয়েছে বিভিন্ন স্কুল ও শরণার্থী শিবিরে। সেখানেও তাদের জীবনের নিরাপত্তা নেই। ইসরাইলি হামলায় প্রতিদিনই জীবন দিতে হচ্ছে বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের।
ফিলিস্তিনের এক অধিবাসী বলেন, ‘ইসরাইলি হামলায় আমরা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ি। পাথর সরিয়ে আমার ভাই-বোনদের খুঁজতে শুরু করলাম।’
আরেকজন বলেন, ‘ইউএনআরডব্লিউএ বলেছে আমরা এই স্কুলে নিরাপদ আছি। কিন্তু ইসরাইলের হাতে কোনো জায়গাই নিরাপদ না। তারা সব জায়গায় বোমা হামলা চলছে।’
এরমধ্যেই, সোমবার ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের নিক্ষেপ করা একটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। এ সময় রাজধানী তেল আবিব জুড়ে বেজে ওঠে সাইরেন। যদিও হুথি গোষ্ঠী বলছে, তারা সফলভাবে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ফিলিস্তিনিদের পক্ষে শুরু থেকেই লড়াই করে আসছে হুথিরা।
হুথি গোষ্ঠীর সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারা বলেন, ‘ইসরাইল ভূখণ্ড লক্ষ্য করে হুথি বিদ্রোহীরা তাদের সামরিক অভিযান চালিয়ে যাবে। ইসরাইলের অধিকৃত অঞ্চলে শত্রু পক্ষের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চলবে। গাজা উপত্যকায় ইসরাইলিদের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত হুথিরাও থামবে না।’
এই যখন অবস্থা তখন, আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের আগেই গাজা যুদ্ধের অবসান চেয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ সময়ে মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি না দিলে হামাসের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘জিম্মিদের বিষয় নিয়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সঙ্গে খুব ভাল আলোচনা হয়েছে। ২০ জানুয়ারির মধ্যে জিম্মিদের ফেরত না দিলে পরিণতি হবে ভয়াবহ। আমরা এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে সবাই ইতিবাচক।’
এদিকে, ঘুষ, দুর্নীতি ও প্রতারণার মামলায় দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দিয়ে আদালতে হাজিরা দিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিইয়ামিন নেতানিয়াহু।
এ সময় গাজা যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যের চলমান অস্থিরতা নিয়েও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রথম ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিচারের মুখোমুখি হলেন নেতানিয়াহু।