এ বছরের জুন মাসে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ অর্থায়নে চারুকলা ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। যে স্থানটিতে ভবন নির্মাণ হচ্ছে, সেটি অতিথি পাখির অভয়াশ্রম হিসেবে পরিচিত একটি জলাশয়ের পাশে হওয়ায় নির্মাণকাজ শুরুর সময়ই একদল শিক্ষার্থী এতে বাধা দেন। তাদের বাধা উপেক্ষা করে সেখানে অন্তত ১৫০টি গাছ কেটে শুরু হয় নির্মাণকাজ।
এরপর আগস্টে সরকার পতনের পর একদল শিক্ষার্থী ভবনটির নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন একদল শিক্ষার্থী। তারা ভবনটির নির্মাণ স্থগিতের দাবি জানান। সবশেষ গত ৩ নভেম্বর এক প্রশাসনিক সভায় সাময়িকভাবে ভবন নির্মাণকাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
তবে, চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা বলছেন, অ্যাকাডেমিক ও ক্লাসরুম সংকটের কারণে এ ভবনটি নির্মাণ করা অত্যন্ত জরুরি।
চারুকলা শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের ক্লাস সংকট নয়টা ব্যাচের। প্রতিটা ব্যাচের জন্য আমাদের এখানে পর্যাপ্ত রুম নেই। যে কারণে বাধ্য হয়ে আমাদের ক্লাস রুমের বাহিরে ক্লাস করতে হচ্ছে।’
আরেকজন বলেন, ‘চারুকলা ভবন নির্মাণ অবস্থায় বার বার বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।’
ভবন নির্মাণে নির্ধারিত জায়গাটি অতিথি পাখির অভয়ারণ্য। এছাড়া ভবন নির্মাণে রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। তাই অন্য কোন জায়গা নির্ধারণ করে ভবন নির্মাণের আহ্বান বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া শিক্ষার্থীদের।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘চারুকলা ভবন যেখানে নির্মাণ হচ্ছে সেখানে লেক রয়েছে। এই লেকটা একদম ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এই লেকেই সব থেকে বেশি অতিথি পাখি আসে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানালেন, প্রাণ প্রকৃতি রক্ষা ও ভবন নির্মাণের বিষয়ে কমিটি করা হয়েছে। এছাড়া চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের স্বার্থে দ্রুত সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান বলেন, ‘স্থান নির্ধারণের সংকট থাকার কারণে প্রাণ প্রকৃতি রক্ষা নিয়ে যারা কাজ করে তাদের কিছু বক্তব্য রয়েছে। ফলে এখানে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। প্রাণ প্রকৃতি রক্ষা ও ভবন নির্মাণের বিষয়ে কমিটি করা হয়েছে। তিন সপ্তাহের মধ্যে আমরা প্রতিবেদন পাবো।’
ক্লাস রুমসহ অ্যাকাডেমিক ভবনের সংকট নিরসনে চারুকলা অনুষদের জন্য ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার পক্ষে সবাই। তবে, এ ভবনসহ ক্যাম্পাসে যে কোনো উন্নয়ন কাজের জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনার তাগিদ দেন সংশ্লিষ্টরা।