পরিবেশ ও জলবায়ু
দেশে এখন
0

পাহাড় খেকোদের কারণে ক্ষতবিক্ষত কুমিল্লার লালমাই পাহাড়

পাহাড় খেকোদের কারণে ক্ষতবিক্ষত কুমিল্লার লালমাই পাহাড়। ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এ লাল মাটির পাহাড় কেটে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিনোদন কেন্দ্র, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়িসহ নানা স্থাপনা। যাতে পাহাড় পরিণত হচ্ছে সমতল ভূমিতে। উজাড় হচ্ছে বনভূমি।

১১ মাইল লম্বা ও ২ মাইল চওড়া এই পাহাড় কেটে গেলো দুই দশকে গড়ে উঠেছে কাশবন নামের পার্ক ও রিসোর্ট, ব্লু ওয়াটার পার্ক, লালমাই লেকল্যান্ড, ডাইনোসর পার্ক, ম্যাজিক প্যারাডাইস। নির্মাণাধীন আছে বেশ কিছু বিনোদন কেন্দ্র।

এছাড়া এই পাহাড়ের টিলা কেটে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি সিসিএন বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা ফিজিক্যাল কলেজসহ নির্মাণ হয়েছে সরকারি-বেসরকারি নানা স্থাপনা।

কুমিল্লা জেলার প্রায় তিন হাজার একর এলাকাজুড়ে রয়েছে পাহাড়। যার মধ্যে লালমাই অন্যতম। পাহাড়টির অধিকাংশ জমি ব্যক্তি মালিকানাধীন হওয়ায় প্রয়োজনে, অপ্রয়োজনে মাটিকেটে বনভূমি উজাড় করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘আগামী ১০ থেকে ১২ বছর পর আমরা এই পাহাড় দেখতে পাবো না।’

ইতিহাস ও প্রকৃতি রক্ষায় পাহাড় সংরক্ষণ জরুরি। তাই সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে জন সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞরা।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘আমরা যদি এই পাহাড়কে রক্ষা করতে চাই তাহলে আমাদের সচেতনতার প্রয়োজন পড়বে।’

কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র কেমিস্ট রায়হান মোর্শেদ বলেন, ‘আমরা গত ১ বছর চারটার মতো মামলা করেছি। আমরা প্রতিনিয়ত এইটা করে থাকি।’

পাহাড় ও বনভূমি বাঁচাতে ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

কুমিল্লা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জি এম মোহাম্মদ কবির বলেন, ‘পাহাড় কাটার কোনো সুযোগ নেই। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেটে ছিল তার জন্য আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি।’

পরিবেশবিদদের মতে, এভাবে চলতে থাকলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে লালমাই পাহাড়ের কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। পাহাড়ের বেশির ভাগ টিলা এরমধ্যেই সমতল ভূমিতে রূপ নিয়েছে। এটি সংরক্ষণ জরুরি। তাই লালমাই পাহাড় রক্ষায় সরকারের সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও।

ইএ