দেশে এখন
0

দুর্নীতির শীর্ষে পাসপোর্ট, বিআরটিএ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা: টিআইবি

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছে, দেশের সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত তিনটি খাত হলো পাসপোর্ট, বিআরটিএ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা। আজ (মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর) 'সেবা খাতে দুর্নীতি ও জাতীয় খানা জরিপ' শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানিয়েছে টিআইবি।

প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘২০২৩ সালে ৭০.৯ শতাংশ খানা পরিবার দুর্নীতির শিকার হয়েছে। ২০২৩ সালে সার্বিকভাবে ঘুষের শিকার হওয়া খানা বা পরিবারের হার ৫০.৮ শতাংশ। জরিপে অন্তর্ভুক্ত ঘুষদাতা খানার ৭৭.২ শতাংশ ঘুষ দেয়ার কারণ হিসেবে 'ঘুষ না দিলে সেবা পাওয়া যায় না' এ কথা বলেছেন। ২০২৩ সালে সার্বিকভাবে খানা প্রতি গড়ে পাঁচ হাজার ৬৮০ টাকা ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছে। সর্বোচ্চ ঘুষ আদায়ের তিনটি খাত হলো বিচারিক সেবা, বিমা ও ভূমি সেবা।’’

তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে প্রাক্কলিত মোট ঘুষের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার ৯০২ কোটি টাকা। যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত জাতীয় বাজেটের ১.৪৩ শতাংশ এবং বাংলাদেশের জিডিপির ০.২২ শতাংশ। দুর্নীতির শিকার খানাসমূহের মাত্র ৮.৫ শতাংশ খানা অভিযোগ করেছে। শহরাঞ্চলের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে সেবাখাতে ঘুষের শিকার হওয়ার হার বেশি (৪৭.৪ শতাংশ বনাম ৫২.৪ শতাংশ)। ঘুষের শিকার হওয়া গ্রামাঞ্চলের খানার তুলনায় শহরাঞ্চলের খানাগুলোকে বেশি পরিমাণে ঘুষ দিতে হয়েছে। ২০২৩ সালে খানা জরিপটি মোট ১৭টি সেবা খাতের ওপর পরিচালিত হয়েছে।'

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'সেবাখাতে দুর্নীতি বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে ২০২৩ সালের মে থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। আর জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে ২০২৪ সালের ৩ মে থেকে ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট পর্যন্ত। দুর্নীতির শিকার হয়েও অভিযোগ না করার কারণ হিসেবে ৪৫ শতাংশ পরিবার মনে করে সেবা নেয়ার ব্যবস্থাই দুর্নীতিগ্রস্ত। তাই তারা প্রয়োজন মনে করেনি। ২৮ শতাংশ হয়রানির ভয়ে অভিযোগ করেনি। ২৫.৬ শতাংশ মনে করেন অভিযোগ করলে কাজ হয় না। ১৪.৩ শতাংশ মনে করেন ঘুষ না দিলে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়া যাবে না।'

তিনি বলেন, 'দুর্নীতি বন্ধ না হওয়ার পিছনে দুর্নীতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয় না, দুর্নীতিবাজদের জবাবদিহিতা বা শাস্তির আওতায় আনা হয় না বরং দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়টা গুরুত্বপূর্ণ, এ সময় দুর্নীতি না নিয়ন্ত্রণ করা গেলে পরবর্তীতে এটি নিয়ন্ত্রণ কষ্টসাধ্য।'

দুর্নীতি বন্ধে ডিজিটালাইজেশন অন্যতম সহায়ক তবে সেটি যথাযথ ব্যবহারযোগ্য না হওয়াকে দায়ী করছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক। এছাড়া সকল কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন না করার পিছনে বাজে উদ্দেশ্য রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এসএস