বঙ্গোপসাগরের সব ঢেউ যেন আরেকবার একসঙ্গে আছড়ে পড়লো ব্যাংককের সৈকতে। বিমসটেকভুক্ত সাত দেশের সাত নেতা একসঙ্গে এই সাংগ্রিলাতে। আয়োজক থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর একদম পাশেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের দায়িত্ব পালন করা নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস। তার পাশেই প্রতিবেশী ভারতের সরকার প্রধান।
বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর সবচেয়ে বড় পটপরিবর্তন, দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতিতে নতুন সমীকরণ, যুগ যুগ ধরে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সংঘাত আর ভূমিকম্পের মত অতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর ব্যাংককের এই শীর্ষ সম্মেলন থেকে কী বার্তা আসে দক্ষিণ এশিয়ার ১৮০ কোটি মানুষের জন্য সে দিকে নজর ছিল সবারই।
এসব প্রেক্ষাপটে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তুলে ধরেন কী করে ১৯৭১ এর পর একটা কর্তৃত্ববাদী শাসকের পতনের মাধ্যমে বাংলাদেশের পুনর্জন্ম হলো, সেই ইতিহাস।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে এখানকার মানুষের মধ্যে পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, তা পূরণেই বদ্ধপরিকর তার সরকার।’
জানান, এরই মধ্যে সংবিধান, নির্বাচন, বিচারবিভাগ কিংবা জনপ্রশাসন সংস্কারে যেসব প্রস্তাব এসেছে তার বাস্তবায়নে একটি জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন গঠন করা হয়েছে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের পর যখনই একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে, তখনই জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।’
দীর্ঘমেয়াদে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান না করলে সমগ্র অঞ্চলের অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে বলে জানান অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান।
বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর বাণিজ্য পাঁচ দশমিক নয় শতাংশ থেকে বাড়াতে বিমসটেকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি বাস্তবে রূপ দেবার প্রস্তাব করেন ড. ইউনূস।
বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় টেকসই উন্নয়নের জন্য পারস্পরিক শান্তি এবং নিরাপত্তার প্রয়োজন। সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে আগামী দুই বছরের জন্য বিমসটেক সভাপতির দায়িত্ব পায় বাংলাদেশ।