ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ১০টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। দেশব্যাপী এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। সংবিধান সংশোধনের আওয়াজে সমর্থন দিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। প্রস্তাবনাও দিচ্ছে নাগরিক সমাজ।
জাতীয় প্রেসক্লাবে ল রিপোর্টার্স ফোরাম সংবিধানের খসড়া প্রস্তাবনা করে কেমন সংবিধান চাই শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে। যেখানে আইনজ্ঞরা বলেন, একনায়কতন্ত্র থেকে বের হতে হলে সংবিধানের কিছু কিছু জায়গায় যৌক্তিক সংস্কার প্রয়োজন।
এসময় নির্বাচন সংস্কার কমিশন প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার জানান, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের এক তৃতীয়াংশ পরিবর্তন করে তা কলুষিত করা হয়েছে।
আর গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ জানান, রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য সবপক্ষকে একসাথে বসাতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে। সেখানেই নতুন সংবিধান দরকার কিনা সেই সিদ্ধান্ত আসা উচিত।
ড. বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, ‘আমাদের সাংবিধানিক আকাঙ্ক্ষা ছিল যে জনগণের প্রতিনিধিরা শাসন করবে। কিন্তু এখন আমলাদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে। আমাদের ১১ অনুচ্ছেদে যেটা বলা আছে, জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হতে পারে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।’
কামাল আহমেদ বলেন, ‘রাজনৈতিক সমঝোতার মধ্য দিয়েই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে নতুন সংবিধান হবে না কি সংবিধানের শুধু সংশোধনী হলেই সেই সংশোধনীতে কাজ হবে। আমি আশা করবো যে সব পক্ষকে এক টেবিলে বসানোর উদ্যোগ এই সরকার নিতে পারে।’
তবে সংবিধান অনুযায়ী এই সরকার সংবিধান সংশোধন করতে পারবে কি না তা নিয়েই সংশয় জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান জানান, মানুষের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে পারলেই সংবিধান থেকে শুরু করে সব কিছুই সংশোধন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় জনগণ অংশগ্রহণের জন্য তার স্বাধীন সার্বভৌম ক্ষমতা যে প্রয়োগ করতে পারে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য যা যা করণীয় তাই করলেই আমার মনে হয় সেই সংবিধান সার্বভৌম হবে। সেই সংবিধানে বাংলাদেশের মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে।’
সংবিধানের পরিবর্তন হলেও মৌলিক কাঠামোর পরিবর্তন হতে পারে না বলেও মত দেন বক্তারা।