মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল: সৌদি যুবরাজ

গাজায় ইসরাইলি বাহিনী গণহত্যা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে ইসরাইলকে সরে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আরব লিগের মহাসচিব। শুধু তাই নয়, ইসরাইলের সদস্যপদ স্থগিত করতে জাতিসংঘে ভোটাভুটি আয়োজনের কথাও জানান তিনি। এদিকে আরব লিগ আর ওআইসির সম্মেলনের মধ্যেই গাজায় হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরাইল।

গাজা ইস্যুতে এবার নড়েচড়ে বসেছে মধ্যপ্রাচ্য। অরগানাইজেশন ফর ইসলামিক কো-অপারেশন-ওআইসি ও আরব লিগের সম্মেলনে ইসরাইলের কড়া সমালোচনা করেন মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের নেতারা। রিয়াদে আয়োজিত সম্মেলনে আরব লিগের মহাসচিব বলেন, ইসরাইল যা করছে, এতে করে দ্রুতই সদস্যপদ বাতিলে জাতিসংঘে ভোটাভুটির আয়োজন করা হবে। শুধু তাই নয়, গাজা, পশ্চিমতীরসহ ইসরাইলের দখলকৃত অঞ্চলগুলো মিলে ভবিষ্যতে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের অঙ্গীকারও করেন সম্মেলনে অংশ নেয়া নেতারা।

আরব লিগের মহাসচিব আহমেদ আবুল গায়েত বলেন, ‘জাতিসংঘের অনেক সদস্য দেশ এখন দ্বিরাষ্ট্র নীতির পক্ষে কথা বলছে। অনেক দেশ এখন ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পথে। সব দেশই জাতিসংঘে ইসরাইলি সদস্যপদ বাতিলে সমর্থন করবে।’

সম্মেলনে সৌদি যুবরাজ গাজায় চলা ইসরাইলি গণহত্যার কড়া সমালোচনা করেন। গাজা আর পশ্চিমতীর থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করে নেয়া জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। যুবরাজ বলেন, গাজায় যুদ্ধ বন্ধে পুরোপুরি ব্যর্থ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, ‘গাজায় ইসরাইলি গণহত্যায় ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষ মরছে। হাজার হাজার মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। এই গণহত্যার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আল আকসা মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট করছে ইসরাইল। এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা জরুরি হয়ে পড়েছে।’

এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে গাজায় চলা গণহত্যা নিয়ে একসঙ্গে নিন্দা জানিয়েছে ৫৭টি দেশ। পশ্চিমতীর, পূর্ব জেরুজালেম, গাজা আর গোলান মালভূমিসহ ১৯৬৭ সাল থেকে ইসরাইল যেভাবে আরব এলাকা দখল করে রেখেছে, সেগুলো দখলমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এই অঞ্চলে সংঘাত বন্ধ হবে না বলেও মন্তব্য করেন আরব ও মুসলিম লিগের নেতারা।

এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে মুসলিম দেশগুলোর সম্মেলনের মধ্যেই গাজার সেইফজোন খ্যাত আল মাওয়াসির একটি ক্যাফেতে ইসরাইলি ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। এতে, নিহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এছাড়াও, মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি হামলায়ও প্রাণ গেছে বহু ফিলিস্তিনির।

অন্যদিকে, লেবাননেও বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। হিজবুল্লাহর সঙ্গে সীমান্তে বাড়ছে সংঘাত। প্রতিনিয়ত চালানো হচ্ছে ড্রোন ও রকেট হামলা। ইসরাইলের অভিযোগ, সোমবার প্রায় ২শ রকেট দিয়ে লেবানন থেকে ইসরাইলে হামলা চালানো হয়। এরমধ্যে লেবানন থেকে ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ও ব্যস্ত আন্তর্জাতিক বন্দর হাইফাতে ৮০টিরও বেশি রকেট হামলা হয়েছে। যদিও ইসরাইলের নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। তিনি ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে হামলার ইঙ্গিতও দিয়েছেন। জাতিসংঘে ইরানকে নিজেদের শত্রু হিসেবেও অভিহিত করেছেন ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট।

ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজক বলেন, ‘বর্তমান যুগে এসেও ইরানের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ আছে। ইসরাইলের বিরুদ্ধে খোলাখুলিই হামলার কথা বলে যাচ্ছে ইরান। পরমাণু হামলার হুমকি দিচ্ছে। এই দেশের মদদপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীরা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে আছে। আয়াতুল্লাহর শাসন আমাদের শত্রু।’

এদিকে, ইসরাইলে হামলা, এক হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা আর দুই শতাধিক মানুষকে বন্দি করে রাখার ৪০০ তম দিনে তেল আবিবে আবারও বিক্ষোভে নেমেছে হাজারো বিক্ষোভকারী। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি তাদের দাবি, দ্রুতই নিশ্চিত হোক বন্দি বিনিময় চুক্তি। নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দাবি করছেন অনেকেই।

এএম