'যুক্তরাষ্ট্রের জন্য স্বর্ণযুগ'- রাজনীতিতে ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনের পর এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশকে সুস্থ করে তোলার প্রতিজ্ঞা তার। নির্বাচনে জয়ের পাশাপাশি হোয়াইট হাউজে পা রাখা শীর্ষ ধনী রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মার্কিন এ ধনকুবেরেরও সম্পদও আলোচনার কেন্দ্রে।
প্রথমবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং জয়ের আগে ২০১৫ সালে ট্রাম্পের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল এক হাজার কোটি ডলারের বেশি। করোনা মহামারির প্রভাবে এবং আইনি লড়াইয়ের জেরে নয় বছর পর সম্পত্তির অঙ্ক কিছুটা কমেছে ৭৮ বছর বয়সী এই রিপাবলিকান নেতার।
বংশানুক্রমে পাওয়া সম্পদের পাশাপাশি অনেক ধরনের ব্যবসায়ে যুক্ত ট্রাম্প। তার সাম্রাজ্যের বড় অংশই আবাসন ব্যবসার অবদান। এছাড়া হোটেল, বিলাসবহুল আবাসিক ভবন, গল্ফ কোর্স ইত্যাদি খাতে বিনিয়োগ আছে ব্যবসায়ী এই নেতার।
ম্যানহাটনে ট্রাম্প টাওয়ার আর ফ্লোরিডার পাম বিচে প্রাসাদসম মার-আ-লাগো তার উল্লেখযোগ্য দু'টি রিসোর্ট ও বাসভবন। নামকরা যেসব স্থাপনায় ট্রাম্পের অংশীদারিত্ব রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ম্যানহাটনে তার কার্যালয় ভবনে এবং ট্রাম্প ডোরাল মায়ামি গলফ রিসোর্টে মোট ৮০ কোটি ডলারের মালিকানা।
রয়েছে শোবার ঘর আর স্বর্ণের সিটবেল্টসমেত ২০১১ সালে ১০ কোটি ডলার দিয়ে কেনা ব্যক্তিগত বোয়িং সেভেন-থ্রি-সেভেন বিমান।
নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালের নেপথ্যে থাকা ট্রাম্প মিডিয়া অ্যান্ড টেকনোলজি গ্রুপের স্বত্বাধিকারী ট্রাম্প। তার ধনভাণ্ডারে সাম্প্রতিক লাভের খাতায় উল্লেখযোগ্য অংশ এই প্রতিষ্ঠানটির।
এছাড়া শোনা যায়, ডিজিটাল সম্পদে আগ্রহ থেকে ক্রিপ্টো মুদ্রায় ১০ লাখ ডলারের বেশি অর্থ বিনিয়োগ করেছেন ট্রাম্প, নন-ফাঞ্জিবল টোকেন্স বা এনএফটিস বিক্রি করে লাভের মুখও দেখেছেন তিনি।
এককালে নিজের লেখা বিভিন্ন বই, বিশেষ করে দ্য আর্ট অব দ্য ডিল থেকে এখনও রয়্যালটি পান তিনি। নিজের প্রযোজিত ও অভিনীত রিয়েলিটি টিভি শো দ্য অ্যাপ্রেন্টাইসের মতো ছোট পর্দায় নানা উদ্যোগ এবং লেটার্স টু ট্রাম্পের মতো প্রকাশনা থেকেও পান রয়্যালটি।
পোশাক থেকে শুরু করে গৃহস্থালী, পরনের ব্যয়বহুল স্নিকার্স থেকে শুরু করে ধর্মগ্রন্থ বাইবেল- এমন অসংখ্য পণ্যে নিজের নাম ব্যবহারের অনুমতি দিয়েও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেন ট্রাম্প।
বিগত মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন এবং পরবর্তীকালে নানা নির্বাচনী জনসভার সময় রাজনৈতিক তহবিল সংগ্রহ কার্যক্রম থেকেও বড় অঙ্কের লাভের মুখ দেখেছেন সাব্কে এবং নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে প্রভাব আর এযাবৎকালের শীর্ষ ধনী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে সম্পদের পাশাপাশি ট্রাম্পের আর্থিক দায়ও আলোচনার বাইরে নয়।
সকল প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর জন্য বাধ্যতামূলক যে সম্পদ বিবরণী দিয়েছেন ট্রাম্পও, সেখানে উল্লেখ আছে তার বিভিন্ন সম্পদ বন্ধক রেখে ঋণ নেয়ার তথ্য। এছাড়া যৌন নিগ্রহ, মানহানি আর দুর্নীতির তিন মামলায় ৫০ কোটি ডলারের বেশি জরিমানাও করা হয়েছে এ নেতাকে।