জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ নিহতের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থী নিপীড়ন ও আবু সাঈদ হত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ঘটনার ১০০ দিন পর মামলার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আবু সাঈদ হত্যায় অভিযুক্ত গণিত বিভাগের শিক্ষক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান রহমান এবং লোকপ্রশাসনের শিক্ষক আসাদুজ্জামানকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে সিন্ডিকেট সভায়।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শওকাত আলী বলেন, 'অ্যাকাডেমিক শৃঙ্খলার তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, হলের সিট বাণিজ্য, হল দখলকারী, লেজুরবৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ থাকবে। দু'জন শিক্ষক তার মধ্যে একজন হচ্ছে লোকপ্রশাসন বিভাগের ও অন্যজন হচ্ছে গণিত বিভাগের এছাড়াও কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে সাতজন আছে। তাদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।'
এছাড়া বরখাস্ত হচ্ছেন সাতজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে আলাদা মামলার কথাও জানিয়েছেন বেরোবি উপাচার্য।
ড. শওকাত আলী বলেন, 'যেসকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষক জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা শিগগিরই মামলা রুজু করবো।'
একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত হয়েছে কোনো শিক্ষক কিংবা কর্মচারী সদস্য হতে পরবেন না কোনো রাজনৈতিক দলের। আর শিক্ষার্থী নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্ত নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ৭২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শৃঙ্খলা কমিটিকে দায়িত্ব দিয়েছে সিন্ডিকেট সদস্যরা। এমন সিদ্ধান্তে খুশি বেরোবি শিক্ষার্থীরা।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, 'বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের লেজুরবৃত্তিক রাজনীতি থাকবে না। এটা প্রথম সিদ্ধান্ত।'
অন্য একজন শিক্ষার্থী বলেন, 'আজকে সিন্ডিকেট মিটিংয়ের মাধ্যমে এটা হয়েছে এবং আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সকলেই খুশি এই সিদ্ধান্তে।'
জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। মেধাবী এ শিক্ষার্থীর নিহতের মধ্য দিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন বারুদের মত ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে।