হেমন্তের কুয়াশামাখা ভোর। ঘাসের ডগা ও ধানের শিষে শিশির বিন্দু। কচুপাতায় জমে থাকা শিশির। ডোবার জলে ফুটে থাকা শাপলা আর স্নিগ্ধ প্রকৃতি জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা।
শীত আসতে বেশ দেরি থাকলেও হেমন্তেই হিমালয়কন্যা পঞ্চগড়ে কড়া নাড়ছে শীত। প্রকৃতিতে এখন সাজ সাজ রব। হালকা শীতের সকালে একবুক নিশ্বাস নিতে রোজ ছুটে চলে কিছু মানুষ।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন জানান, এখন পঞ্চগড়ে দিন দিন শীত আসছে। কুয়াশাও বাড়ছে।
স্থানীয়দের মধ্যে আরও একজন জানান, দিনের বেলায় সামান্য আবহাওয়া একটু কড়া থাকেও রাতে দেখা যায় অনেকটা শীতের প্রকোপ বেড়ে যায়।
দিনে রোদের তাপ থাকলেও সন্ধ্যা নামতেই কমতে থাকে তাপমাত্রা। সকালে হালকা কুয়াশা ছড়িয়ে থাকে বিস্তীর্ণ জনপদে। তীব্রতা না থাকায় শীতের এই সময়টুকু বেশ উপভোগের। তাই শহরের কোলাহল ছেড়ে শীত উপভোগ করতে এরই মধ্যে পঞ্চগড়ে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। জমে উঠেছে জেলার পর্যটন।
দর্শনার্থীদের মধ্যে একজন জানান, শীতের সময় পঞ্চগড় খুবই সুন্দর অপরূপ সৌন্দর্য ধারণ করে।
পঞ্চগড়ে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা । ছবি: এখন টিভি
হেমন্তের মেঘমুক্ত আকাশে বছরের এই সময়টিতে ভাগ্য সহায় হলে দেখা মিলে কাঞ্চনজঙ্ঘার। তাই পর্যটকরা ভ্রমণের জন্য বেছে নেন শীতের এই সময়কে। সমতলের চা বাগান, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, বিজিবি বিএসএফের যৌথ প্যারেড, তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো, মহারাজার দিঘি ও রকস মিউজিয়ামসহ জেলার পর্যটন স্থানগুলো প্রকৃতিপ্রেমীদের বাড়তি খোরাক জোগায়।
দর্শনার্থীদের মধ্যে আরও একজন জানান, ঢাকার যে পরিবেশ দূষিত পরিবেশ। সেটা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এতদূরে আসা।
গণঅভ্যুত্থানের পর মন্দা গেলেও শীতের আগমনীতে ফের গতি ফিরেছে পর্যটনে। তবে বরাবরই পিছিয়ে এ জেলার পর্যটন; যদিও নানা উদ্যোগের কথা বলছে জেলা প্রশাসন।
পঞ্চগড় চেম্বার ও সভাপতি জেলা আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট মেহেদী হাসান খান বাবলা বলেন, 'গত কয়েকমাসে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য অনেকটা ক্ষতির মুখে। এখন শীতের আমেজটা ধরে রাখার জন্য এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে আসার ফলে মোটামুটি আমাদের ব্যবসা আবার চলছে।'
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, 'বিভিন্ন মোড়গুলো আছে এইগুলোকে আমরা আলোকসজ্জায় সজ্জিত করতে চাই। আর টুরিস্ট বাস নামানোর একটা পরিকল্পনা আছে আমাদের। আগামীতে এই জেলাকে আমরা টুরিস্ট জেলা হিসেবে পর্যটন নগরীতে পরিণত করতে পারবো।'
দেশের উত্তর দুয়ারে যখন শীতের আনাগোনা তখন দাবি উঠেছে পঞ্চগড়ের পর্যটন খাতে সরকারি বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর।