প্রযুক্তি সংবাদ
তথ্য-প্রযুক্তি
0

স্পেসএক্স স্টারশিপ: নাটকীয় অবতরণে লঞ্চপ্যাডে ফিরে এলো বুস্টার

সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট স্টারশিপ পরীক্ষামূলকভাবে মহাকাশে পাঠালো স্পেস এক্স। তবে, যে বিষয়টি ঘিরে আলোচনা তুঙ্গে তা হলো, প্রথমবারের মতো রকেট উড্ডয়নে সাহায্যকারী বুস্টার আবারও ফিরে এলো লঞ্চপ্যাডে। বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্কের মালিকানাধীন মহাকাশযান নির্মাতা সংস্থা স্পেস এক্সের প্রত্যাশা, ভবিষ্যতে এই মহাকাশযানই চাঁদে আর মঙ্গলে নিয়ে যাবে মানুষকে।

রোববার (১৩ অক্টোবর) টেক্সাসের বোকা চিকা মহাকাশযান উৎক্ষেপণ কেন্দ্রের লঞ্চপ্যাড থেকে উড্ডয়ন করে স্পেস এক্সের আলোচিত রকেট 'স্টারশিপ'। টাওয়ার সংলগ্ন 'স্টারশিপ বুস্টার' থেকে আলাদা হয়ে 'সুপার হেভি বুস্টারটি' উড়ে যায় রকেট নিয়ে। তবে, এদিন স্পেসএক্সের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল 'সুপার হেভি বুস্টারটিকে' পুনরায় লঞ্চপ্যাডে ফিরিয়ে আনা। স্টারশিপ রকেট উড়ে যাওয়ার পরপরই 'সুপার হেভি বুস্টারটির ধাতব শরীরে আগুন ধরে গেলেও প্রথমবারের মতো সবাইকে তাক লাগিয়ে এটি ফিরে আসে টেক্সাসের লঞ্চ টাওয়ারে।

উড্ডয়ন কেন্দ্র বোকা চিকা থেকে স্টারশিপের রকেটটিকে মহাকাশে পাঠিয়ে যখন হেভি বুস্টারটি পৃথিবীর দিকে আসছিলো, তখন এটির উচ্চতা ছিল ৭০ কিলোমিটার। গতি কমিয়ে আনতে এটি ব্যবহার করেছিলো র‌্যাপটর ইঞ্জিনগুলো। উড্ডয়নের ৭ মিনিট পরেই লঞ্চ টাওয়ারের বাহুতে বসে যায় ২৩৩ ফিটের এই হেভি বুস্টার।

এই সফলতা স্পেস এক্সের অনেকদিনের প্রচেষ্টার ফলাফল। অনেক বছর ধরেই বারবার ব্যবহার করা যায় এমন রকেট লঞ্চার তৈরিতে গুরুত্ব ছিল স্পেস এক্সের। যে রকেট পৃথিবী থেকে চাঁদ আর মঙ্গলে নিয়ে যাবে মানুষকে। এদিকে, ৪শ' ফুটের ফাঁকা স্টারশিপ রকেট চলে গেছে মহাকাশে, নিজের মতো উড্ডয়ন করছে ৬ ইঞ্জিনের সহযোগিতায়। এরপর ভূপাতিত হবে ভারত মহাসাগরে। এর আগের ৪টি মহাকাশযান উড্ডয়ন আর অবতরণের মধ্যেই বিস্ফোরিত হয়ে যায়, গেল জুন মাসে যেটি পাঠানো হয়, অক্ষত অবস্থায় অবতরণ করে সমুদ্রে।

একেকটি রকেট উৎক্ষেপণের ক্ষেত্রে একধাপ করে নতুন উদ্ভাবনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে স্পেসএক্স। ভবিষ্যৎ মিশনের জন্য তৈরি হচ্ছে হেভি বুস্টার আর স্টারশিপ রকেট। খরচ আর সময় কমানোর জন্য ভবিষ্যতে রকেট আর বুস্টারের পুনঃব্যবহারের বিষয়টি হয়ে পড়ছে ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠানের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যেন সহজেই কার্গো কিংবা মানুষ নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় মহাকাশে।

স্পেসএক্সের পরিকল্পনা, ২০২৬ সালের মধ্যে নাসার নভোচারীদের চাঁদে পাঠানো হবে স্টারশিপের ক্যাপসুল দিয়ে। যে কারণে সরকারের সঙ্গে হয়েছে ৪শ' কোটি ডলারের চুক্তি। স্পেস এক্সের বিশ্বাস, প্রথমবার মঙ্গলেও মানুষ নিয়ে যাবে স্টারশিপ। আর তাই একে আরও বেশি তাপ প্রতিরোধী করতে চলছে গবেষণা। এই অর্জনকে প্রকৌশলীদের যুগান্তকারী অর্জন হিসেবে দেখছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন মহাকাশযান নির্মাতা সংস্থা স্পেসএক্স।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন শনিবারই স্পেস এক্সের স্টারশিপকে লাইসেন্স দিয়েছে উড্ডয়নের। ২০১৭ সালে জনসমক্ষে আসে ইলন মাস্কের মহাকাশযান নির্মাতা সংস্থা স্পেস এক্সের নভোযান স্টারশিপ। আগের উড্ডয়নগুলোতে অনেকবারই আকাশেই বিস্ফোরিত হয় এই মহাকাশযান। রোববার দুই ধাপের সুপার হেভি বুস্টারে করে স্টারশিপ উড্ডয়নকে নতুন সফলতা হিসেবে দেখছে স্পেস এক্স।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর