আফ্রিকা
বিদেশে এখন
0

প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় হুমকিতে ঘানার স্বর্ণখনির শ্রমিকদের জীবন

হুমকির মুখে পড়েছে ঘানার স্বর্ণ খনির শ্রমিকদের জীবন। ফুসফুসসহ নানা রোগে ভুগছেন তারা। বেশিরভাগ খনিতে নেই প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা। দূষিত পানিতে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, বনাঞ্চল ও ফসলি জমি। সংশ্লিষ্টরদের দাবি, দেশটির ৮০ শতাংশ খনিরই নেই লাইসেন্স। এসব খনি থেকে মূল্যবান ধাতুটির উত্তোলন বাড়লেও পাচার হয়ে যায় বেশিরভাগ স্বর্ণ।

বন উজার করে, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চলছে স্বর্ণের সন্ধান। কর্দমাক্ত শরীরে দিনরাত চলছে শ্রমিকদের হাড়ভাঙা পরিশ্রম। এই দৃশ্যের দেখা মিলবে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ ঘানার বেশিরভাগ এলাকায়।

ঘানার র‍্যামশ্যাকল খনি। দেশটির ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এই স্বর্ণখনি। যেখানে কাজ করছেন হাজারও শ্রমিক। স্বর্ণ খননে পারিবারিক সচ্ছলতা ফিরলেও হুমকির মুখে তাদের স্বাস্থ্য। বেশিরভাগ খনিতেই নেই প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা।

শ্রমিকদের মধ্যে একজন জানান, কাজ শুরুর আগে আমার কাছে কিছুই ছিল না। স্বর্ণের খনিতে কাজ করতে মরিয়া ছিলাম। যখন খনন শুরু করি, তখন আমি প্রায় ৬০ হাজার ঘানাইয়ান সিডি আয় করি। পরে আরও ছেলেদের নিয়ে খনিতে কাজ করা শুরু করি।

দেশটির মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, নাইট্রিক অ্যাসিডের বিষাক্ত ধোঁয়ায় বেশিরভাগ খনি শ্রমিকরা ভুগছেন ফুসফুস সংক্রমণে। পাশাপাশি খনির কাছাকাছি শহর ও গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়ছে মৃত্যু ঝুঁকি। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ ও জলপথ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বনাঞ্চল ও ফসলি জমি।

এদিকে অবৈধভাবে স্বর্ণখনন ও শ্রমিকদের সুরক্ষায় সরব বিভিন্ন সংগঠন। বিক্ষোভ মিছিলের পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ খনি বন্ধের দাবি তাদের।

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন জানান, অবৈধ স্বর্ণ উত্তোলন থামাতে হবে, জলাশয় দূষিত হচ্ছে। আমরা অসুস্থ হতে চাই না, আমরা কিডনির সমস্যা চাই না, আমরা দীর্ঘজীবী হতে চাই, আমরা জীবনকে উপভোগ করতে চাই।

ঘানার মোট স্বর্ণ উৎপাদনের ৪০ শতাংশই আসে খনি থেকে। যদিও দেশটির ৭০ থেকে ৮০ শতাংশই খনির নেই কোন লাইসেন্স।

ঘানার খনিজ কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের দাবি, লাইসেন্স না থাকায় পাচার হয়ে যাচ্ছে উত্তোলনের বেশিরভাগ স্বর্ণ । যার ফলে রপ্তানি আয়ে কোন অবদান রাখছে না ঘানার স্বর্ণশিল্প।

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে আরও একজন জানান, সম্ভবত ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ খনির লাইসেন্স নেই। ঘানার অনেক আন্তর্জাতিক সীমান্তে রয়েছে, সেখানে সরকারি নজরদারিও কম। স্বর্ণ উত্তোলন ও রপ্তানির অনেক পার্থক্য রয়েছে। এটি প্রমাণ করে এখানে চোরাচালান জড়িত এবং সম্ভবত অর্থ পাচারও রয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।

ঘানার খনি খাত নিয়ন্ত্রক সংস্থার তথ্য বলছে, দেশটির ছোট আকারের খনিগুলো থেকে চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে উত্তোলন করা হয়েছে ১.২ মিলিয়ন আউন্স স্বর্ণ ।