ধর্ম
দেশে এখন
0

আজ মহাঅষ্টমী ও কুমারী পূজা

পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে মহাষ্টমী পালন করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসবে অষ্টমীর মূল আকর্ষণ কুমারী পূজা। শ্রীরামকৃষ্ণের কথা অনুসারে, শুদ্ধাত্মা কুমারীর মধ্যে ভগবতী প্রকাশ পান। কুমারী পুজোর মাধ্যমে নারী জাতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।

আজ (শুক্রবার, ১১ অক্টোবর) শারদীয় দুর্গোৎসবের তৃতীয় দিন রাজধানীর মণ্ডপে মণ্ডপে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। দেবী দুর্গতিনাশিনীর দেখা পেতে অষ্টমীর সকালেই মণ্ডপে আসতে শুরু করেন ভক্তরা। তিথি অনুযায়ী, সকাল ৬.১০মিনিটেই চণ্ডীপাঠ দিয়ে শুরু হয় অষ্টমীর আচার আনুষ্ঠানিকতার প্রথম ধাপ কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা। পুষ্পাঞ্জলি দেয়া হয় সকাল ১০.৩০ মিনিটে।

দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায়, প্রথমে রাজধানীর রামকৃষ্ণ মঠে অষ্টমীর বিশেষ কুমারী পূজা স্থগিত করা হলেও পরবর্তীতে বিশেষ নিরাপত্তার বলয়ে আয়োজন করা হয় এই পূজার। তাই স্বাভাবিকভাবেই রামকৃষ্ণ মঠে ছিল ভক্তদের অগণিত ভিড়।

দেবী দুর্গার আরেক নাম কুমারী হওয়ায় সব নারীর মধ্যে মাতৃভাব উপলব্ধি করার জন্যই মহাষ্টমীতে কুমারীপূজার আয়োজন করা হয়।

এবার ৮ বছর বয়সী সংহিতা ভট্টাচার্য নামের এক ব্রাহ্মণ কন্যাকে কুমারী সাজানো হয়। শাস্ত্রীয় মতে যার নাম রাখা হয় কুবজিকা। ঢাকের তালে তালে উলুধ্বনি দিয়ে চণ্ডীপাঠ করে তাকে দেবীর আসনে বসিয়ে অগ্নি, জল, বস্ত্র, পুষ্প এবং বাতাস এই পাঁচ উপকরণে দেয়া হয় কুমারী মায়ের পূজা। অর্ঘ্য দেয়ার পর দেবীর গলায় পরানো হয় পুষ্পমাল্য।

ভক্তরা বলেন, 'নারীর প্রতি সম্মানের এই বার্তা ছড়িয়ে পড়ুক বিশ্বজুড়ে।'

ভক্তদের মধ্যে একজন জানান, কুমারী পূজার মাধ্যমে প্রতিটা নারী জাগরিত হয়। প্রতিটি নারীর মধ্যে মা যে আছেন বিরাজিতমান সেটা ফুটিয়ে তোলা, সেটা জানানো।

সকল মানুষের মধ্যে যেন সুবুদ্ধি জাগ্রত হয়। নারীকে শুধু নারী নয়, নারীকে যেন একজন মানুষ হিসেবে গণ্য করা হয় বলেও জানান একজন ভক্ত।

এছাড়াও এই পূজার মধ্যদিয়ে সমাজে সবার দৃষ্টিভঙ্গিতে যেন ইতিবাচক পরিবর্তন আসে সেই প্রত্যাশা করেন নতুন প্রজন্ম

আরও একজন জানান, নারীর চলাচল এবং সর্বস্তরে যাতে নিরাপদে চলাচল করতে পারে এইটাই প্রত্যাশা।

নারী কোনো ভোগ্য নয় বরং পূজনীয়। তাই প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে কুমারীপূজা ছাড়া হোম-যজ্ঞ করেও দুর্গাপুজোর সম্পূর্ণ ফল পাওয়া যায় না।

রামকৃষ্ণ মিশনের প্রবীণ মহারাজ স্বামী পরদেবানন্দ মহারাজ বলেন, 'আমাদের শাস্ত্র বলছে ব্রাহ্মণ কন্যা ছাড়াও অন্যান্য বর্ণের কন্যাকেও পূজা করা যাবে। তবে ব্রাহ্মণ কন্যা রূপে পূজা করায় প্রসস্তিত এবং শাস্ত্রে বেশি উল্লিখিত।'

এছাড়াও তিথি অনুযায়ী সকালেই অনুষ্ঠিত হয় এবছরের সন্ধি পূজার। অষ্টমীর শেষ ২৪ মিনিট ও নবমীর প্রথম ২৪ মিনিট সর্বমোট ৪৮ মিনিটে সন্ধিপূজা হয়। মূলত দেবী চামুণ্ডার পূজা করা হয় এ সময়। এ সময়েই দেবী দুর্গার হাতে বধ হয়েছিল মহিষাসুর, আর রাম বধ করেছিলেন রাবণকে।