মাত্র এক মাস পর যুক্তরাষ্ট্রের মসনদে বসবেন নতুন নেতা। জনজরিপে দুই প্রার্থীর মধ্যে চলছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। একে অপরকে ছেড়ে কথা বলছেন না কেউই। নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে এসে কী ভাবছেন ভোটাররা? নতুন প্রেসিডেন্টের কাছ থেকেই বা কী চান তারা?
স্থানীয় একজন বলেন, ‘আমি এমন একজন প্রেসিডেন্ট চাই যিনি সত্য বলবেন এবং সম্মিলিত প্রয়াসে সমস্যার সমাধান করবেন। শুধু পেশাদারিত্ব চাই। আমাদের এমন একজন প্রেসিডেন্ট বেছে নেয়া দরকার, যিনি মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের অগ্রাধিকার দিবেন।’
ট্রাম্পের দাবি, তার মতো মার্কিন অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পারেনি কোনো প্রেসিডেন্ট। এই যুক্তির পক্ষে লক্ষ্য করা গেছে জনসমর্থন। তাই ব্যক্তি ট্রাম্পকে ছাপিয়ে পশ্চিমের অঙ্গরাজ্য অ্যারিজোনার বাসিন্দাদের অনেকেই বেছে নিচ্ছেন রাজনীতিবিদ ট্রাম্পকে। তবে গণতন্ত্র রক্ষার জন্য কামালার বিকল্প নেই বলেও মনে করেন অনেকে।
স্থানীয় একজন বলেন, ‘আমি ট্রাম্পের বক্তৃতা শুনতে পছন্দ করি না। তার অনেক বিষয়ই আমার অপছন্দ। তবে আমি বিশ্বাস করি ট্রাম্পের অধীনে অর্থনীতি তুলনামূলক ভালো অবস্থানে ছিল।’
অন্য একজন বলেন, ‘হ্যারিস-ওয়ালজ পার্টিকে ভোট দিতে যাচ্ছি গণতন্ত্র ও নারী অধিকার রক্ষার জন্য। এমন অনেক যুক্তিই দিতে পারবো। অ্যারিজোনা ও যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্র রক্ষায় তাদের সমর্থন দিচ্ছি।’
পশ্চিম ছেড়ে এবার আসা যাক পূর্বাঞ্চলীয় ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যে। এখানকার অনেক বাসিন্দার ধারণা, কামালা নির্বাচিত হলে দুর্বল প্রেসিডেন্ট পাবে যুক্তরাষ্ট্র। আবার অতীত অপরাধের জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধেও মিলেছে জনমত।
ম্যারিল্যান্ডের স্থানীয় একজন বলেন, ‘আমার তাকে দৃঢ় মনে হয়নি। তিনি দুর্বলতা প্রদর্শন করেন। আমাদের শত্রুরা এর সুযোগ নিতে পারে। আমার মনে হয় না এমন দেশ বিনির্মাণ করা উচিত যেখানে কোনো অপরাধী পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট হতে পারেন।’
আটলান্টিক মহাসাগর ও হাডসন নদী মিলেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে। গগণচুম্বী অট্টালিকার পাশাপাশি এই অঙ্গরাজ্যে দেখা মেলে দারিদ্রতার ছাপও। তাই ভবিষ্যত প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে ভোটারদের মধ্যেও রয়েছে মিশ্র বক্তব্য।
স্থানীয় একজন বলেন, ‘আমি ট্রাম্পের সব বক্তব্যকে সমর্থন করি না। তবে তিনি দেশকে যে পথে নিতে চান, আমি এর সমর্থন করি। কামালা নির্বাচনে তারুণ্যের উদ্দীপনা নিয়ে এসেছেন। দুই বয়োবৃদ্ধ লোকের চেয়ে তিনি অনেক উদ্যোমী। আমার মতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি যোগ্য ব্যক্তি।’
এদিকে, বিশ্লেষকরা বলছেন, অভিবাসীবিরোধী নীতির কারণে সমর্থন পাচ্ছে রিপাবলিকানরা। অন্যদিকে গর্ভপাতের স্বাধীনতা প্রশ্নে ইতিবাচক অবস্থান অনেক রাজ্যে এগিয়ে রাখছে ডেমোক্র্যাটদের। এতে নির্বাচনের ফল পাল্টে দিতে পারে মাত্র দু'টি কিংবা একটি সুইং স্টেট। তবে সরাসরি ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করায় ট্রাম্পের চেয়ে কামালাকে দৌড়ে কিছুটা এগিয়ে রাখছেন বিশ্লেষকরা।
ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের সিনিয়র ফেলো ড্যারেল এম ওয়েস্ট বলেন, ‘সুইং স্টেটগুলোয় কামালা নিজ থেকে প্রচারণা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে ট্রাম্প বাইরের গ্রুপ ও ফোনকলের ওপর নির্ভর করছেন। শেষ পর্যন্ত খুবই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা যেতে পারে। সম্ভবত একটি বা দুটি সুইং স্টেটের ওপর ফল নির্ভর করবে। তবে শেষ দুই মাসে নির্বাচনী দৌঁড়ে অংশ নেয়ার পর থেকে কামালার শক্তিশালী অবস্থান ডেমোক্র্যাটদের মনোবল বাড়িয়েছে।’
তবে অভ্যন্তরীণ প্রসঙ্গ ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে প্রার্থীদের অবস্থানের ওপর ফল নির্ভর করবে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।