দেশে এখন
0

মাস পেরোলেও দুর্ভোগ কমেনি ফেনীর বন্যাদুর্গতদের

বন্যা থেকে উত্তরণের মাস পেরিয়ে গেলেও দুর্ভোগ কমেনি ফেনীর উত্তরের বাসিন্দাদের। উজানের পানির সাথে আসা বালুতে ভরাট হয়েছে পুকুর, রাস্তা-ঘাট ও ফসলী জমি। ঘর-বাড়ি থেকে বালু সরাতেই দিশাহারা বাসিন্দারা।

ভারত সীমান্তবর্তী ফেনীর পরশুরামের পশ্চিম অলকা গ্রামের আবুল হোসেন পিয়ার। বাড়ির আঙিনার ৫ একরের পুকুরে ছিল অন্তত আড়াই লাখ টাকার মাছ। গোসল থেকে থেকে শুরু করে গৃহস্থলির অনেক কাজই হতো এই পুকুরের পানি দিয়ে। সাম্প্রতিক বন্যায় সেই পুকুরের পুরোটাই ভরাট হয়েছে বালুতে। যেন বিস্তৃর্ণ বালুচর। চরম ভোগান্তিতে বাড়িটির কয়েক পরিবারের মানুষ।

আবুল হোসেন পিয়ার জানান, এইটা পুকুর ছিল। নদী ভাঙার কারণে পুকুরটা ভরে গেছে। আমাদের অনেক টাকার মাছ চলে গেছে। আর এখন এই পুকুর ব্যবহারের উপযোগী না।

আবুল হোসেন পিয়ারের পুকুর যেটা সাম্প্রতিক বন্যায় পুরোটাই ভরাট হয়েছে বালুতে। ছবি: এখন টিভি

শুধু এই একটি পুকুর নয়, আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় বালুতে ভরাট হয়েছে পরশুরামের অর্ধ শতাধিক পুকুর। ভেসে গেছে কোটি টাকার মাছ। পাশাপাশি বালুতে ঢাকা পড়েছে বাড়ির আঙিনা আর ফসলি জমি।

অনেকের বাড়ির ছাদের কার্নিশ পর্যন্ত বালুর স্তূপ। এক মাসেও ঘরের ভেতর থেকে বালু ও পলিমাটি সরাতে না পারায় এখনো ছাদে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন বাসিন্দারা।

বাসিন্দাদের মধ্যে একজন জানান, এটা আমাদের উঠান ছিল। ঘর ও ছিল। কিন্তু এটা বর্তমানে বালুর চর হয়ে গেছে।

এখানে ধান চাষ করা হতো । খামার ছিল যা সব এখন পানির নিচে তলিয়ে গেছে বলেও জানান একজন বাসিন্দা।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলার পরশুরামে বন্যার পানির স্রোতে আসা বালুতে চাপা পড়েছে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর কৃষিজমি। সেই সাথে নষ্ট হয়েছে ৮৫ ভাগ জমির রোপা আমন। ক্ষতি পোষাতে বাদাম, তরমুজসহ বালু মাটিতে চাষ করা যায় এমন ফসল আবাদের পরামর্শ তাদের।

ফেনী পরশুরাম উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. সিফাত হাসান বলেন, '১৮'শ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সবজির বীজ এবং নগদ এক হাজার টাকা করে প্রণোদনা এসেছে। পাশাপাশি রবিশস্যের প্রণোদনা এসেছে। এটা আমাদের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এবং যেখানে বালু পড়ে কৃষি জমি ক্ষতি হয়েছে সেই কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে।'

আগস্ট মাসে ৩ দফায় বন্যায় উপজেলার মির্জানগর, চিথলিয়া, বক্সমাহমুদ ইউনিয়ন ও পরশুরাম পৌরসভার অনেক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সর্বশেষ ২০ আগস্ট ভারতের পাহাড়ি ঢলে পরশুরামের ৯০ শতাংশ এলাকা ৮ থেকে ১৫ ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। যাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আবাদি জমি ৫ থেকে ৭ ফুট বালুর নিচে।