সবুজের জোছনায় ঢাকা পড়া পাহাড় অনন্তপুর গ্রামের প্রতিটি মেঠো পথ এমনি নয়নাভিরাম , সবজি আর মৌসুমি ফলের চাষাবাদ বাড়ায় গ্রামটির সুনাম এখন মুখেমুখে। প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় সবুজ মাল্টা জানান দেয় এখাকারনার জীবিকার খতিয়ান কয়েক দশকে কতটা পোক্ত হয়েছে ?
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার বাবুগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কাজী উদ্দিন, শিক্ষকতার পাশাপাশি কৃষিতে তার মন পড়ে থাকে। প্রথম দিকে সবজির আবাদ করলেও, খরচ বাড়ায় ঝোঁক বাড়ে ফল চাষে।
২০০৯ সালে ২০০ ভিয়েতনামী সবুজ মাল্টা বা বাউ - থ্রি মাল্টার চারা লাগিয়ে শুরু করলেও এখন মাল্টা রয়েছে তার অন্তত ১০ বিঘা জমিতে। গতবছর ৫ লাখ বিক্রি করলেও এবার মাল্টার বাম্পার ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় বিক্রি ৭ লাখ ছাড়াবে বলে আশা তার।
কম খরচে বারোমাসি এই মাল্টা আবাদে লাভ বেশি থাকায় গ্রামের বেশিরভাগ কৃষক ও শিক্ষিত যুবকরাও চাষ বাড়াচ্ছেন। বেলে দোয়াশ মাটি মাল্টা চাষে উপযুক্ত হওয়ায়, ময়মনসিংহের ১৩ টি উপজেলাতেই মাল্টার আবাদ হয়েছে ৩৭৪.৪ হেক্টর জমিতে ।
বাগানের প্রতি গাছে ১ থেকে দেড় মন মাল্টা আসায় নুয়ে পড়ছে গাছও। বর্তমান বাজার মূল্যে প্রতি কেজি মাল্টা প্রকারভেদে ৭০ থেকে ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে পারছেন কৃষকরা। মাল্টার সরবরাহ বাড়াতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে কৃষিবিভাগ।
সারাবছরই জমিতে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। তবে ৫০০ টাকা মজুরিতে খুব একটা পোষাচ্ছেনা বলে দাবি তাদের।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হিসাবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদেশি ফল আমদানি ১০ হাজার টন কমেছে। গত অর্থবছরে ফল আমদানি হয়েছে ৫ লাখ ৮৯ হাজার টন।এসব ফল কিনতে ক্রেতাদের খরচ হয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকা।
কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশে উৎপাদিত মাল্টার চাহিদা বাড়াতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও এগিয়ে আসতে হবে, তবেই কমে আসবে বিদেশ থেকে আমদানি করা মাল্টার পরিমাণ।