গ্রামীণ কৃষি
কৃষি
0

নওগাঁর নার্সারিতে বছরে প্রায় ৪ কোটি টাকার চারা বিক্রি

গাছের চারা উৎপাদনকে কেন্দ্র করে নওগাঁর মান্দায় পরিচিত পেয়েছে নার্সারি গ্রাম বড়পই। এ গ্রামে ২০০ বিঘা জমিতে গড়ে ওঠা নার্সারিতে বছরে প্রায় ৪ কোটি টাকার চারা বিক্রি হয়। তবে নার্সারি ব্যবসায় রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতাও। সহজ শর্তে স্বল্প সুদে ঋণ পেলে বিস্তার লাভ করবে এ খাত।

নওগাঁর মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর বাজার থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দক্ষিণের গ্রাম বড়পই। গত ৩০ বছর আগেও এ গ্রামে স্বল্প পরিসরে ছিল হাতে গোনা কয়েকটি নার্সারি। তবে লাভজনক হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে এর প্রসার। যেখানে রয়েছে ফলদ, বনজ, ঔষধি ও শোভাবর্ধনকারীসহ নানা চারাগাছ।

নার্সারির চারার পরিচর্যায় ব্যস্ত মালিক আব্দুল মান্নান। ছবি: এখন টিভি

এ গ্রামের নার্সারি মালিক আব্দুল মান্নান। ৩০ বছর আগে নিজের ১০ কাঠা জমি নিয়ে শুরু করেন নার্সারি ব্যবসা। ব্যবসা ভাল হওয়ায় বছর বছর পরিধি বেড়েছে।

নার্সারির মালিক আব্দুল মান্নান জানিয়েছেন, আমাদের নার্সারিতে প্রায় ১০০ এর উপরে গাছ আছে। এখানে আমাদের ৫০-৬০ হাজার টাকার প্রতিদিন বিক্রি আছে।

আব্দুল মান্নানের মতো এ গ্রামে ৪০ জন নার্সারি ব্যবসায়ী রয়েছে। এ গ্রামে প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে নার্সারি। যেখানে প্রতি বছর প্রায় ৪ কোটি টাকার চারা বিক্রি হয়।

চারা উৎপাদন করতে গিয়ে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েন ব্যবসায়ীরা। এসময় বেসরকারি সংস্থা থেকে উচ্চ সুদে ঋন নিতে হয়। সহজ শর্তে ঋন পেলে ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি অর্থনৈতিক দিক দিয়ে আরও এগিয়ে যাবেন নার্সারি মালিকরা।

এলাকাবাসীদের মধ্যে একজন জানান, এই নার্সারির জন্য আমাদের এই অঞ্চল হিসাবে পরিণত হয়েছে।

আরও একজন এলাকাবাসী জানান, এখান থেকে চারা উৎপাদন হয়ে দেশে বিদেশে সব জায়গায় চলে যাচ্ছে।

এ গ্রামে নার্সারি গড়ে উঠায় অন্তত ২ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। যারা সারা বছর নার্সারিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। আর এসব নার্সারি থেকে চারা কিনে বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তাদের একজন জানান, চারাটি যখন আমরা বিক্রি করবো এমন সময় আসার জন্য ২ বছর সময় লাগে। এই দীর্ঘমেয়াদি সময়ের জন্য আমরা আর্থিক সংকটে পড়ে যাই। যার ফলে আমরা ব্যাংক থেকে ঋণগ্রহণ করি যাতে উৎপাদন ব্যাহত না হয়।

কৃষি অফিসের তথ্যমতে, জেলায় তালিকাভুক্ত ১২৭ টি নার্সারি রয়েছে। সব ধরনের সহয়াতা ও পরামর্শ নিয়ে নার্সারি মালিকদের পাশেই রয়েছেন বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'নার্সারির মালিকরা কোয়ালিটি সম্পূর্ণ চারা উৎপাদনে আগ্রহী হচ্ছে এবং চারা বিক্রি করে তারা একটা ভালো লাভ পাচ্ছে। এইজন্য বেসরকারি উদ্যোক্তা হিসেবে এই নার্সারি গুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।'

সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই পেশাকে আরও গতিশীল করার পাশাপাশি অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান তৈরি হবে।