নওগাঁ সদর উপজেলার বলিহার গ্রামের কৃষক বিধান ঘোষ। চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো রোপণের লক্ষ্যে ১০ বিঘা জমি প্রস্তুত করছেন তিনি। তবে সার কিনতে গিয়ে দাম নিয়ে বিপাকে এই চাষি।
বিধান ঘোষের অভিযোগ, মৌসুমের শুরুতে শুধু সার কিনতে বাড়তি ১০ হাজার টাকা বাড়তি গুনতে হয়েছে তাকে। একদিকে ডিজেলের দাম বাড়তি, অন্যদিকে চড়া সারের দাম। সবমিলিয়ে খরচ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে।
কৃষক বিধান ঘোষ বলেন, ‘সারের বস্তা যেখানে এক হাজার ২০০ টাকায় পাওয়া যায় সেটা এখন এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা লাগছে কিনতে। শুধু ইউরিয়ার দামটা ঠিক আছে।’
একই অভিযোগ জেলার অন্যান্য কৃষকদের। তাদের অভিযোগ, সংকটের অজুহাতে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বস্তাপ্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা বাড়তি দামে সার বিক্রি করছেন অসাধু ব্যবসায়ী ও ডিলাররা। এতে বিঘাপ্রতি এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা খরচ বেশি পড়ছে। বাজার তদারকিতে নজরদারি বাড়ানোর দাবি কৃষকদের।
একজন কৃষক বলেন, ‘দোকানে নিতে গেলে বলে যে সার নেই। যখন বেশি টাকা দিচ্ছি তখন সার আছে। সারের দাম বেশি হলে বিঘাপ্রতি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা বেশি পড়ে যাচ্ছে। আমরা কীভাবে, কী করে খাবো?’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ব্যবসায়ীরা। পর্যাপ্ত পরিমাণ সার সরবরাহ আছে বলে জানান তারা।
নওগাঁ সদরের বলিহার ইউনিয়নের সাব-ডিলার গৌতম কুমার মন্ডল বলেন, ‘সারের কোনো সংকট নেই, পর্যাপ্ত পরিমাণ আছে। সরকারের নির্ধারিত মূল্যেই বেচাকেনা হচ্ছে।’
কৃষি বিভাগ বলছে, সরকার নির্ধারিত দামেই বাজারে সার বিক্রি হচ্ছে। কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস কৃষি কর্মকর্তাদের।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কল কর্মকর্তা কঠোর নজরদারির মাধ্যমে সারকে মনিটরিং করছি। এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি নিশ্চিত করছি। এবং আমাদের যে সারের মজুদ রয়েছে তাতে করে সারের কোনো সংকট হবে না।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এক লাখ ৯৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত এসব জমি চাষাবাদে সারের প্রয়োজন ৭৫ হাজার ৪০০ টন।