বিদেশে এখন
0

নিউইয়র্ক সিটির প্রদর্শনীতে ১০০ হাতি!

নিউইয়র্ক সিটির একটি নেইবারহুডে দাঁড়িয়ে আছে ১০০ হাতি। জীবন্ত না হলেও কাঠের তৈরি এই হাতি দেখতে ভিড় করছেন শত শত মানুষ। আয়োজকদের দাবি পৃথিবীটা যতখানি মানুষের ঠিক ততখানিই জীব-জন্তুদের এমন বার্তা পৌঁছে দিতে বিশেষ এই প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছে। ছোট-বড় নানা আকারের এই হাতিগুলো বানিয়েছেন দক্ষিণ ভারতের ২শ' ভাস্কর।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে মা হাতি ও তার সাবকের ছবি।

ভাইরাল হয়েছে মা হাতি ও তার সাবক। ছবি: সংগৃহীত

বিল্পব হাজরার তোলা মর্মান্তিক ছবিটি ২০১৭ সালে স্যানচুয়ারি ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি এওয়ার্ডসে বিশেষ সম্মাননা পায়। ছবিটি ছড়িয়ে পড়ার আবারও আলোচনায় উঠে আসে হাতির ওপর মানুষের বর্বরতার অসংখ্য ছবি, ভিডিও। গর্ভবতী হাতির পেটে জ্বলন্ত রড, পেটে বিষ্ফোরক ঢুকিয়ে গর্ভপাতের মতো জঘন্য সব ঘটনা বারবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে মানুষ কতটা অমানবিক হতে পারে।

এমন বাস্তবতায় মানুষ ও প্রাণী জগতের মেলবন্ধন আরও দৃঢ় করতে এগিয়ে এসেছে পরিবেশবাদীদের একটি দল। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটিতে আয়োজিত 'দ্য গ্রেট এলিফেন্ট মাইগ্রেশন' শীর্ষক প্রদর্শনীতে সহাবস্থান ও সহনশীলতার নতুন বার্তা দিচ্ছে কাঠের তৈরি ১শ হাতির ভাস্কর্য।

দর্শনার্থীদের একজন বলেন, ‘টেলিভিশনে যখন দেখলাম ভারতে কাঠ দিয়ে হাতির ভাস্কর্য বানানো হচ্ছে তখন থেকেই এই আয়োজনে অংশ নিতে আগ্রহী ছিলাম। হাতিগুলো জীবন্ত না হলেও ওদের চোখের ভাষা আমি পড়তে পারছি।’

আরেকজন বলেন, ‘চারপাশে এত খারাপ খবরের মাঝে এই আয়োজনটির কোনো তুলনা হয়না। আপনি যখন খুব ক্লান্ত, সুন্দর কোনো জিনিসের দিকে তাকিয়ে থাকলে আপনার অন্যরকম এক ভালোলাগা কাজ করবে।’

কাঠ দিয়ে হাতির ভাস্কর্য। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ ভারত থেকে হাতিগুলো নিউ ইয়র্কে আনার পর শহরের নানা প্রান্তে এগুলোর প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছে আয়োজকরা। আকার ভেদে হাতির দাম ৮ হাজার থেকে ২২ হাজার মার্কিন ডলার। দর্শনার্থীরা চাইলে ভাস্কর্যগুলো কিনতে পারবেন, ছুঁয়ে দেখলেও বাধা দেবেন না আয়োজকরা। প্রত্যেকটি হাতির গায়ে ঝুলছে আলাদা আলাদা আইডি, লেখা আছে হাতির নামও।

আয়োজকদের একজন বলেন, ‘পাবলিক আর্ট ইলাস্ট্রেশনের মাধ্যমে আমরা মানুষকে বোঝাতে চাই প্রকৃতিতে আরও কত বিচিত্র প্রাণী আছে। এখানে যে সব হাতি দেখা যাচ্ছে এগুলো দক্ষিণ ভারতের কফির বাগানের জংলি হাতি। ভাস্কর্যগুলো পৃথিবীর নানা প্রান্তে নিয়ে যাওয়া হবে। মানুষ ও বন্যপ্রাণী যাতে নিজস্বতা বজায় রেখে স্বাধীনভাবে সহাবস্থান করতে পারে- সেই বার্তাই আমরা পৌঁছে দিতে চাই।’

কাঠের হাতি বিক্রি করে এখনও পর্যন্ত অর্ধ মিলিয়ন ডলারের তহবিল সংগ্রহ করেছেন আয়োজকরা। ম্যানহাটনের মিটপ্যাকিং ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে এই অর্থ বন্যপ্রাণী রক্ষায় ব্যবহার করা হবে।

কাঠের পাশাপাশি খড় ও বিচালি দিয়ে বানানো হয়েছে হাতির ভাস্কর্য। বাঁধন হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে ল্যানটানা নামক এক বিশেষ আগাছা জাতীয় উদ্ভিদ। ম্যানহাটনের মিটপ্যাকিং ডিস্ট্রিক্টে চলবে এই প্রদর্শনী চলবে আগামী ২০ অক্টোবর পর্যন্ত।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর