কোনো কিছুতেই যেনো শান্ত হচ্ছে না মণিপুরের পরিস্থিতি। কুকি ও মেইতেই জনগোষ্ঠীর জাতিগত সংঘাত রূপ নিয়েছে গণ আন্দোলনে। রাজ্য সরকারের দমন পীড়নেও আরও ফুঁসে উঠছে আন্দোলন। অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী পাঠিয়ে রাজ্যে শৃঙ্খলা ফেরাতে চেষ্টায় মোদি সরকার।
কুকি ও মেতেই জনগোষ্ঠীর মধ্যে চলমান জাতিগত সংঘাত এবার ছড়িয়েছে নাগা গোষ্ঠীর মধ্যেও। নাগা পিপলস ফ্রন্টের উখরুল জেলার প্রাণিসম্পদ ও পরিবহনমন্ত্রী খাসিম ভাসুমের গ্রামের বাড়িতে বোমা হামলা চালানো হয়। যদিও সেসময় বাড়িতে ছিলেন না তিনি। হতাহতের কোনো খবরও পাওয়া যায়নি। বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে ক্ষমতায় আসেন খাসিম ভাসুম। হামলাকারীদের এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, মণিপুরের সিংজামেইতে পুলিশের টিয়ারশেলে আহত অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত সন্তান প্রসবের ঘটনায় বিক্ষোভ নতুন মোড় নিয়েছে। স্থানীয় সময় রোববার ওই মৃত শিশুকে নিয়ে থানা ঘেরাও করে হামলা ও ভাঙচুর চালায় সাধারণ মানুষ। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে ভর্তি আছেন। এর প্রতিবাদে ২৪ ঘণ্টার বনধ পালন করে মেইতেই গোষ্ঠীর যৌথ মঞ্চ।
দিল্লিতেও বিক্ষোভ করেছে মণিপুরের বেশ কয়েকটি সংগঠন। তাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অবিলম্বে মণিপুরে আসতে হবে। অন্যদিকে, কেন্দ্র সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করে মণিপুরকে আলাদা প্রশাসনিক রাজ্যের দাবি জানিয়েছে কুকি বিদ্রোহীরা।
রাজ্যের পরিস্থিতি সামাল দিতে পূর্ব ও পশ্চিম ইম্ফল, থৌবাল, বিষ্ণুপুর ও কাকচিং এই পাঁচ জেলায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। পাশাপাশি এসব জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ফের কারফিউ জারি করা হয়েছে। তবে বাসিন্দাদের জরুরি প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে কয়েকটি অঞ্চলে সাত ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল রাখা হয়।
সরকারি চাকরিতে কোটা ও অন্যান্য অর্থনৈতিক সুবিধার দাবিতে গত বছরের মে মাসে মেইতেই ও কুকিদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। গত ১ সেপ্টেম্বর মেইতেই অঞ্চলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে গোটা মণিপুরে।