হঠাৎ দেখলে মনে হতে পারে এটি কোনো দাঙ্গার দৃশ্য। কিন্তু না, এমন অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে অবস্থিত দেশটির পার্লামেন্টে।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সার্বিয়ার স্প্রিং পার্লামেন্টারি সেশনে কিছু এজেন্ডার অনুমোদন নেয়ার চেষ্টা করছিললেন ক্ষমতাসীন দল সার্বিয়ান প্রগ্রেসিভ পার্টির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের আইনপ্রণেতারা। এসময় বিরোধী দলের কয়েকজন এমপি তাদের আসন ছেড়ে স্পিকারের দিকে দৌঁড়ে যান ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এর এক পর্যায়ে কয়েকজন নেতা স্মোক গ্রেনেড এবং কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে মারেন। আর এতেই কালো আর গোলাপী ধোঁয়ায় ঢেকে যায় পার্লামেন্ট কক্ষ।
এ ঘটনার পর স্পিকার আনা ব্রনাবিচ জানান, এ হামলার পর এসএনএস পার্টির নেতা জাসমিনা ওব্রাদোভিচ স্ট্রোক করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন। বিবিসি'র প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ও শিক্ষার্থীদের সমর্থনে মঙ্গলবার এমন ভয়াবহ হামলা চালালেন বিরোধীরা। হামলার সময় পার্লামেন্টের বাইরে উপস্থিত ছিলেন সরকারি বিরোধী বিক্ষোভকারীরা। তাদের পাশে দাঁড়ান বিরোধীদলীয় ডেপুটিরাও।
বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, 'একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা অন্তর্বর্তী সরকার চাই। ভোটচুরি ও ক্ষমতার রাজনীতি বন্ধ হোক।'
বিক্ষোভকারীদের অন্য একজন বলেন, 'এমন একটি সময় এসেছে, আমাদের উচিৎ তরুণদের পাশে দাঁড়ানো। তাদের চাওয়া খুব কম। তারা একটা সাধারণ জীবন চায় মাত্র।'
চারমাস আগে রেলস্টেশনের ছাদ ভেঙ্গে ১৫ জন নিহত হওয়ার পরই দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন শুরু করে দেশটির সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে, সরকারের দুর্নীতি ও অযোগ্যতার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন হাজারো সার্বিয়ান। শুরু থেকে এ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুচিচ-এর দশকব্যাপী একনায়কতান্ত্রিক শাসনের বিপক্ষে এই প্রথম এত বড় পরিসরে বিক্ষোভ শুরু করেছেন সার্বিয়ানরা।