অপরাধ ও আদালত
দেশে এখন
0

শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে: চিফ প্রসিকিউটর

জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার সব আলামত সংগ্রহ করাই প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম। প্রধান অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করার কথাও জানানো হয়। কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন এক পর্যায়ে রূপ নেয় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে।

আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করতে থাকে। আন্দোলন দমাতে বুলেটের আঘাতে ঝড়ে যায় অসংখ্য ছাত্র-জনতার প্রাণ। আহত হয় কয়েক হাজার মানুষ। ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান তিনি।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়েই জানান, ছাত্র জনতার হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।

ইতিমধ্যে ট্রাইব্যুনালে ১১টি মামলার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এরপরই নিয়োগ দেয়া হয় ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর টিম।

দায়িত্ব নিয়ে আজ (রোববার, ৮ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নতুন নিয়োগ পাওয়া প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। এসময় তিনি বলেন, গণহত্যায় জড়িত সকলের বিচার নিশ্চিত করা হবে। এমন বিচার হবে যাতে সব পক্ষের কাছে তা গ্রহণযোগ্য হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বলেন, 'যেহেতু ঘটনাগুলো তাজা। এই ঘটনার আসামী যারা হবেন তারা এখনো দেশের বিভিন্ন জায়গায় আছেন ও কর্মস্থলে কেউ কেউ রয়েছেন। তারা এই আলামতগুলো ধ্বংস করার চেষ্টা করবেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনাগুলোর আলামত সংগ্রহ করা। এমন একটি বিচার করা হবে যেন সবাই বলতে পারে ন্যায় বিচার হয়েছে।' 

ভারতের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তিসহ যেসব চুক্তি অনুযায়ী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, 'সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রধান আসামী। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা আইনি প্রক্রিয়া শুরু করবো। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের সাথে অপরাধী প্রত্যাবর্তন চুক্তি হয়। শেখ হাসিনা সরকার যখন ক্ষমতায় ছিলেন তার সময়ে এই চুক্তি হয়।' 

অতিদ্রুত ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হবে। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা, প্রসিকিউটর দল অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসে পরবর্তী করণীয় ঠিক করার কথা জানায়। এছাড়া সাংবাদিকদের আসামি করার বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা হবে বলেও জানায় নতুন প্রসিকিউটর টিম।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বলেন, 'এই মামলায় শতাধিক আসামী এখনো গ্রেপ্তার আছে এবং দেড় শতাধিক আসামীর বিচার এখনো চলমান আছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিবো কিভাবে এদের ন্যায় বিচার করা হবে।' 

২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবতা বিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। এই ট্রাইব্যুনালের বিচারে মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা ও বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় জামায়াতের একাধিক শীর্ষ নেতার।

ইএ