দেশে এখন
0

লাইসেন্স করা অস্ত্র জমা না দিলে শাস্তি

বরিশালে লাইসেন্স করা অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধে শুরু হয়েছে তৎপরতা। সম্প্রতি অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহারের ঘটনায় ২টি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করেছে পুলিশ। সরকারি নির্দেশে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লাইসেন্স স্থগিত করা আগ্নেয়াস্ত্র থানায় জমা না দিলে শাস্তির আওতায় পড়বেন সংশ্লিষ্টরা। অস্ত্র উদ্ধারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার এখনই সময় বলে মনে করছেন, আইন বিশেষজ্ঞরা।

দেশে ব্যক্তি পর্যায়ে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার রীতি অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। এক্ষেত্রে নানা রকম শর্ত পূরণের পরও অস্ত্র ছাড়া আবেদনকারী ব্যক্তির নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে, প্রশাসন এ বিষয়ে নিশ্চিত হলেই সনদ প্রদান করে। শুধু আত্মরক্ষার্থে সনদপ্রাপ্ত অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে।

অন্যকে ভয় দেখানোর জন্য বৈধ অস্ত্র ব্যবহার ও প্রদর্শন করা যাবে না। কিন্তু এই নিয়ম না মানার নজিরও রয়েছে। সম্প্রতি বরিশালে এমন ঘটনায় দুটি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করেছে পুলিশ।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মোহাম্মদ নজরুল হোসেন জানান, 'সাম্প্রতিক সময়ে হীন রাজনৈতিক স্বার্থে লাইসেন্সকৃত অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এমন অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে'।

আগ্নেয়াস্ত্রের গুলি কেনার ক্ষেত্রেও জেলা প্রশাসকের অনুমতি লাগবে। আর কতগুলো গুলি আছে তার হিসাব থানা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়কে জানাতে হবে। অন্য কেউ এই অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন না।

এতসব শর্ত থাকলেও ঘটছে অনিয়মের ঘটনা। ইতোমধ্যে গেল দেড় দশকে দেয়া লাইসেন্স স্থগিত করে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি থানায় জমার নির্দেশ দিয়েছে বর্তমান প্রশাসন।

বরিশাল জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম জানান, 'সামরিক এবং বেসামরিক কর্মরত নেই এমন সবার কাছ থেকে গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আদেশ ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।'

বরিশালে বৈধ অস্ত্রের সংখ্যা ২১০টি। আর সারাদেশে এখন কমবেশি ৫০ হাজারের মতো।

আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা ২০১৬ অনুযায়ী কোন ব্যক্তি নিজের লাইসেন্স এর বিপরীতে নেয়া অস্ত্র শুধু আত্মরক্ষার জন্য বহন ও ব্যবহার করতে পারবেন। অন্যের ভীতি বা বিরক্তি হতে পারে এমন ক্ষেত্রে অস্ত্র প্রদর্শন করা যাবে না। এটা করলে তার অস্ত্রের লাইসেন্স তাৎক্ষনিকভাবে বাতিল হবে। বরিশালে বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে দুইশ দশটির মত। আর দেশে বৈধ অস্ত্রের সংখ্যা কমবেশি ৫০ হাজার।

সম্প্রতি দেশে ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। বরিশালেও বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের উপর হামলা হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র যে ধরনেরই হোক তা জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করে। সব ধরনের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে এখনই উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞ সুপ্রভাত হালদার।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন সুপ্রভাত হালদারের মতে, 'মানুষের মনে নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনার জন্য সব ধরনের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার এটাই উপযুক্ত সময়।'

নিয়ম ভঙ্গ করে আগ্নেয়াস্ত্রের অপব্যবহার করলেই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে দেয়া বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আগামী ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অস্ত্র ও গোলাবারুদ থানায় জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

tech