অন্যদিকে বিজেপির চোখ মুসলিম ভোটারদের ওপর। এদিকে পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি বা পিডিপি একলা চলো নীতিতে এগুচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা জামায়াত-ই ইসলামকে নিয়ে চলছে টানাহেচড়া।
প্রায় এক দশক পর ভারতের জম্মু–কাশ্মীরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিধানসভা নির্বাচন। ২০১৯ সালে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর বিশেষ মর্যাদা হারায় ভূস্বর্গ হিসেবে পরিচিত জম্মু-কাশ্মীর।
পাঁচ বছর পর আবারও ভোট দেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন কাশ্মীরবাসী। মুসলিম প্রধান কাশ্মীর ও হিন্দুপ্রধান জম্মুর ২০ জেলায় বিধানসভার মোট আসন ৯০টি। আগামী ১৮ ও ২৫ সেপ্টেম্বর এবং ১ অক্টোবর তিন ধাপে ভোট হবে ভূস্বর্গখ্যাত এই উপত্যকায়।
ফল ঘোষণা হবে আগামী ৪ অক্টোবর। দেশটির নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, জম্মু-কাশ্মীরে ভোটার সংখ্যা ৮৮ লাখ ৬৬ হাজার ৭০৪ জন। এদের মধ্যে তরুণ ভোটার ৪ লাখ ২৭ হাজার ৮১৩ জন।
জম্মু–কাশ্মীরে শেষবার বিধানসভার ভোট হয়েছিল ২০১৪ সালে। বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গঠন করেন পিডিপির প্রধান মেহবুবা মুফতি। তবে ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এসে তার সঙ্গ ত্যাগ করে কেন্দ্রীয় শাসন জারি করে মোদি সরকার।
পরের বছর ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে কাশ্মীরকে করা হয় দুই ভাগ। এতে হিন্দুশাসিত জম্মুতে ৬টি আসন বেড়ে হয় ৪৩টি আর মুসলিমপ্রধান কাশ্মীরে ১টি আসন বেড়ে হয় ৪৭টি।
গেল ৫ বছর ধরে অভিভাবকশূন্য এই উপত্যকার শাসন ক্ষমতা নিজেদের করে নিতে মরিয়া বিজেপি। তাদের লক্ষ্য হিন্দুপ্রধান জম্মুর প্রতিটি আসন জয়। অন্যদিকে মুসলিমপ্রধান কাশ্মীরের ভোট টানতেও মরিয়া দলটি। এমনকি জামায়াত-ই ইসলামির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে উঠেপড়ে লেগেছে মোদি সরকার।
এদিকে, বিজেপিকে ঠেকাতে ন্যাশনাল কনফারেন্স বা এনসির সঙ্গে জোট বেঁধেছে রাহুল গান্ধীর দল কংগ্রেস। এনসি নেতা ফারুক আবদুল্লাহ জানান, আলোচনার মাধ্যমেই আসন ভাগ করে নেয়া হবে।
রাহুল গান্ধী বলেন, ‘জম্মু–কাশ্মীরের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে কাজ করবে কংগ্রেস।’
তবে জোটবদ্ধ না হয়ে আপাতত এককভাবে নির্বাচনে লড়ার পরিকল্পনা করছে মেহবুবা মুফতির দল পিডিপি। তাদের নির্বাচনি ইশতেহারে আছে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে আনা এবং পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করা। পিডিপি নেতা আরও জানান, এনসি ও কংগ্রেস জোট কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এলে তাদের সমর্থন দিতেও প্রস্তুত তিনি।
মুসলিম প্রধান জম্মু–কাশ্মীরে কখনো কোনো হিন্দু মুখ্যমন্ত্রী হয়নি। এএনসি, পিডিপি ও কংগ্রেস ছাড়া অন্য কোনো দলও ক্ষমতায় আসেনি। ১০ বছর আগে পিডিপির সঙ্গে জোট বেঁধে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। এবার তারা কোনো হিন্দুকে মুখ্যমন্ত্রী করতে পারলে সেটা হবে ইতিহাস।