জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যমতে, বন্যার কারণে গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জেলার বিভিন্ন উপজেলা কয়েক ফুট পানির নিচে প্লাবিত হয়। নিচু এলাকাগুলোর অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়েছে। প্রতিদিন পানি বাড়তে থাকে, যা বর্তমানে বাড়ছেই। বন্যায় প্রাণিসম্পদে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সদর উপজেলায়। এখন পর্যন্ত বন্যার পানিতে মারা গেছে প্রায় এক লাখ ৮৭ হাজার ৩১৪টি গৃহপালিত পশু, যার মধ্যে রয়েছে ২৮টি গরু, একটি মহিষ, ১২টি ছাগল, তিনটি ভেঁড়া, এক লাখ ৮৬ হাজার ৭৭০টি মুরগি ও ৫০০ হাঁস। পানিতে ভেসে গেছে ৪৮ হেক্টর গোচারণ ভূমি, ১৫৪টন দানাদার খাদ্য, ৩৪৬টন খড় ও ৩৬৬টন কাঁচা ঘাস, যেখানে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় এক কোটি ৪৩ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।
এছাড়াও জেলার ১০৮টি গরুর খামার নষ্ট হয়েছে। যেখানে ক্ষতি হয়েছে এক কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার টাকা, ১৯৬টি হাঁস-মুরগির খামারে ক্ষতি হয়েছে পাঁচ কোটি ৬৯ লাখ ৫০ হাজার ৩০০ টাকা।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর এলাকার নিহা ও এনপি পোল্ট্রির সত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ নূর উদ্দিন বলেন, 'গত ২২ আগস্ট বন্যার পানি ঢুকে খামারে ১৭ দিন বয়সী আট হাজার মুরগি মারা যায়। যার দাম প্রায় ১৫ লাখ টাকা। এছাড়া গরুর খামারে তিনটি বাছুর ও সাতটি বড় গরু মারা যায়, যার দাম প্রায় আট লাখ টাকা।'
এছাড়াও আশপাশের রাণী পোল্ট্রি, মিয়া পোল্ট্রি, আশেক পোল্ট্রি, নবাব পোল্ট্রি ও নোভা পোল্ট্রি’সহ প্রায় ১০টি পোল্ট্রি খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু এতদিন পার হলেও প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে কোনো কর্মকর্তা খোঁজখবর নেননি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, আটটি উপজেলায় প্রাণিসম্পদে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যে ক্ষতি অপূরনীয়। পুরো জেলায় গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় তিনি মানুষের ত্রাণের পাশাপাশি গোখাদ্য সহযোগিতার জন্য অনুরোধ জানান।