এই বছর নাটোরের সিংড়ায় আউশ ধান চাষের অনুকূল আবহাওয়া থাকায় ফলনও হয়েছে ভালো। উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষ করায় বিঘাপ্রতি ফলন হয়েছে ২০ থেকে ২২ মণ। ফলে লাভের আশা করছেন চাষীরা।
ধান চাষীদের একজন জানান, স্বল্পমেয়াদী ধান অল্প খরচে চাষ করা যায়। পোকামাকড়ও কম, সেচ কম লাগে এবং ফলনশীল ধান।
উচ্চফলনশীল এই ধানের দামও ভালো পাওয়া যাবে বলে জানালেন চাষীরা। এতে লাভের স্বপ্ন দেখছেন তারা। ৩-৪ হাজার টাকা খরচ করে ১০ হাজার টাকায় ধান বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান।
মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত এই চার মাস আউশ মৌসুম। বোরো ধান কাটার পর এসব জমি ফেলে রাখতেন চলন বিলের কৃষকরা। তবে সহায়ক জাত ও প্রযুক্তির কারণে বর্তমানে বাড়তি ফসল হিসেবে আউশ ধান চাষ করছেন তারা। এতে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় শ্রমিকদের। বিঘা প্রতি আয় করছেন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা।
প্রতিবছর নাটোরের সদর উপজেলা, সিংড়া, গুরুদাসপুর এবং বড়াইগ্রামে বাড়তি ফসল হিসেবে আউশ ধান চাষ করেন কৃষক। এই বছর জেলায় ৯ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষ হয়েছে। যার ৪ হাজার ২শ' হেক্টর জমিই চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়া উপজেলায়। সব মিলিয়ে এ বছর অন্তত ৫০হাজার টন ধান উৎপাদনের আশা কৃষি বিভাগের। প্রতিবছর আউশ ধান চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে সার, বীজের পাশাপাশি নগদ অর্থ প্রণোদনা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
সিংড়া উপজেলা কৃষি অফিসার খন্দকার ফরিদ উদ্দিন বলেন, 'প্রায় ৩৫০০ কৃষকের মধ্যে ধান, সার ছাড়াও অন্যান্য উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। ধানের উচ্চফলনশীল জাত যেমন, ব্রি ধান ৯৮ চাষ করার ব্যাপারে কৃষকদের উৎসাহিত করছি এবং অনেকে জমিতে এই ধানের চাষাবাদ করছে। আশা করছি ধানের বাম্পার ফলন হবে।'
বোরো ধানের মজুদ কমে আসায় জেলার হাট বাজারগুলোতে কমেছে ধানের সরবরাহ। এতে করে চাল উৎপাদন করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে মালিকদের। তবে খুশির খবর হচ্ছে, এই মৌসুমে আউশ ধান কাটা শুরু হওয়ায়, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এসব ধান চলে যাবে হাট-বাজারগুলোতে। এতে করে দফায় দফায় মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া চালের দাম কমে আসবে বলে মনে করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।