নেত্রকোণায় আমন ধানের বাম্পার ফলন, দাম কমে হতাশ কৃষক

জমিতে ধান কাটা হচ্ছে | ছবি: এখন টিভি
0

নেত্রকোণায় আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এবছর পাহাড়ি ঢল কিংবা বড় দুর্যোগ না হওয়ায় ফলনও হয়েছে ভালো। জেলার বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করেছে মৌসুমের নতুন ধান। প্রকারভেদে মণপ্রতি ধানের দাম মিলছে ৯৫০ থেকে ১৪৫০ টাকা পর্যন্ত। তবে কৃষকরা বলছেন, উৎপাদন ভালো হলেও বাজারে ধানের দাম অনেকটাই কম।

মাঠে মাঠে চলছে আমন ধান কাটার উৎসব। পুরোদমে চলছে মাড়াই এবং নতুন ধান ঘরে তোলার কর্মযজ্ঞ। বিনা ধান ১৭, ব্রি ধান ৭৫ ও ব্রি ধান ১০৩ এর ভালো ফলন হয়েছে নেত্রকোণাজুড়ে। কাঠা প্রতি গড়ে চার থেকে সাড়ে চার মণ পর্যন্ত ধানের ফলন হয়েছে। তবে সার, বীজ, কীটনাশকে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে, তাতে নতুন ধান বিক্রি করে কাঙ্ক্ষিত দাম মিলছে না অভিযোগ কৃষকদের।

কৃষকরা জানান, ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তবে কিছুদিন আগে যে বৃষ্টি হয়েছে তাতে তাদের ধানে অনেক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে জমিতে পানি জমে গেছে ফলে তাদের ধান কাটতে কষ্ট হচ্ছে। তারা ধানের পেছনে যে খরচ করছেন সেই খরচ তারা তুলতে পারছেন না ধান বিক্রি করে বলে জানান কৃষরা।

জেলার অন্যতম বড় ধানের হাট দুর্গাপুরে মোটা ধান বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৬০ টাকার মধ্যে। চিকন ধানের মধ্যে স্বর্ণা, রঞ্জিত বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকা। আর পাইজাম ধান বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৪৫০ টাকার মধ্যে। যা পরবর্তীতে যাচ্ছে দিনাজপুর, শেরপুর, আশুগঞ্জসহ দেশের বড় বড় ধানের মোকামগুলোতে।

আরও পড়ুন:

ব্যবসায়ীরা জানান, ৯০০ টাকা বাজার দর চলছে এ দরে তাদের লাভ হচ্ছে না। আগে যে ধান বিক্রি হতো ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ পর্যন্ত এখন সেই ধানের দাম পাওয়া যাচ্ছে না।

কৃষি বিভাগ বলছে, চলতি আমন মৌসুমে জেলায় ধানের ভাল ফলন হয়েছে। আর কৃষকরা ধান কেটে একই জমিতে সরিষা আবাদ করে বাড়তি আয় করতে পারবেন বলে জানান কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা।

নেত্রকোণা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ ড. চন্দন কুমার মহাপাত্র বলেন, ‘এবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ-বালাই কম থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। আমন আগাম কর্তন করার ফলে সেই জমিতে কৃষকরা সরিষা লাগাতে পারছেন। কৃষকরা একটি বাড়তি ফসল পাচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে সাহায্য করে যাচ্ছি।’

চলতি মৌসুমে জেলার ১০ উপজেলায় ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। যা থেকে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৪৫ হাজার ৩০০ টন। যারা বাজারমূল্য প্রায় ২ হাজার ১ ৯৪ কোটি দুই লাখ টাকা।

এফএস