নওগাঁ সদর উপজেলার কাদোয়া বটতলা গ্রামের কৃষক সোহেল রানা। চাকরি ছেড়ে ৫ বছর ধরে ধান ও বিভিন্ন শাক-সবজির আবাদ করছেন তিনি। তবে বর্তমানে ১ হাজার বস্তায় চায়না জাতের আদা চাষ করছেন সোহেল রানা।
বস্তা, মাটি, ছাই, সার ও বীজ দিয়ে আদা চাষে খরচ পড়েছে ৫০ হাজার টাকা। যেখানে প্রতি বস্তায় গড়ে ১ কেজি আদা উৎপাদন হয়, যা বিক্রয় মূল্য প্রায় দেড় লাখ টাকা।
আদা চাষীরা বলেন, 'বস্তা প্রতি ৫০ টাকা মতো খরচ হয়ছে এবং এখন নিজের চাহিদা মেটানোর পর দেশে মসলা জাতীয় পন্যের চাহিদা মেটানো সম্ভব।'
শুধু সোহেল রানাই নয়, তার দেখাদেখি অনেকেই বাড়ির উঠানে ও পতিত জায়গায় কেউ আবার বাণিজ্যিক ভাবেও বস্তায় মসজা জাতীয় এই পণ্যের চাষ করেছেন। খরচ ও পরিশ্রম কম এবং লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা ঝুঁকছেন এই চাষে, যাতে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তারা।
আরো দুই চাষী বলেন, 'কৃষি অফিস থেকে আদার বীজটা সংগ্রহ করেছিলাম তারপর ছয়শ বস্তার মতো আদা রোপণ করি।' 'বাড়িতে খাওয়ার জন্য ৫-৬ বস্তা আদা লাগিয়ে এখন আমি তার কিছু অংশ বাজারে বিক্রি করতে পারবো।‘
জুন-জুলাই মাসে আদা রোপনের উপযুক্ত সময়। রোপনের প্রায় ৬ মাস পর ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে তোলার উপযোগী হয়। একটি বস্তা থেকে গড়ে এক কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। চাষিরা বলছেন, এ পদ্ধতির চাষে রোগবালাইয়ের পরিমাণও হয় কম।
আরো কয়েকজন চাষী বলেন, 'আম বাগানের মধ্যে আদা চাষ করছি এতে করে আমাদের চাহিদা ও মেটাবে এবং দুইটি ফসল চাষ করে লাভবান হবো।' 'রোগবালাই কম, পরিশ্রম কম, লাভবান হওয়া যায়।'
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এবছর ৪ লাখ বস্তায় আর ৪০ হেক্টর জমিতে আদা চাষ হয়েছে, যা থেকে উৎপাদন লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ৪০০ টন।
উপসহকারী কৃষি কর্মকতা মেসবাউল আরেফিন , 'আদার যে গোড়াঁ পঁচা রোগ হয় কৃষকরা যদি সেটা দমন করতে পারে তাহলে আদার শতভাগ সফলতা পাওয়া যাবে।'
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'খুব বেশি পরিচর্যা দরকার হয় না ,তুলনামূলক খরচ কম কিন্তু উৎপাদন ভালো। প্রতি বস্তায় উৎপাদন হয় প্রায় ৮০০ গ্রামের মতো এ বছর আশা করছি ৩০০ মেট্রিক টন এর মতো আদা ।'
চলতি বছর নওগাঁয় উৎপাদন হওয়া আদার বাজারমূল্যে আনুমানিক ৮ কোটি টাকা।