সাধারণত পে অর্ডার এবং আরটিজিএস বা রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্টের মাধ্যমে অনলাইনে নিজস্ব ব্যাংক হিসাব থেকে শুল্ক কর পরিশোধ করেন আমদানিকারকরা। শিপিং বিল, পোর্ট ডেমারেজসহ বিভিন্ন চার্জ ও ট্যারিফ পরিশোধ করা হয় পে অর্ডারে। কিন্তু, আর্থিক ঝুঁকিতে থাকা ইসলামী ব্যাংকসহ ছয়টি ব্যাংকের গ্রাহকরা অনলাইনে শুল্ক কর পরিশোধে সমস্যায় পড়েছেন। এসব ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে আরটিজিএস করতে পারছেন না গ্রাহকরা। এ অবস্থায় টাকা পাওয়া যাবে কি না সেই শঙ্কায় শিপিং বিল পরিশোধে এই ছয় ব্যাংকের পে অর্ডার নিচ্ছে না শিপিং এজেন্টরা। ফলে পণ্য ডেলিভারি ব্যাহত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক স্বপণ বলেন, 'ওই ব্যাংকগুলোর পে অর্ডার কিছু কিছু শিপিং এজেন্ট রিসিভ করছে না। তারা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছে, ভাবছে এই পে অর্ডারগুলো ক্যাশ হবে না বা অন্যকিছু হবে না। যে কারণে শিপিং এজেন্টগুলো খুব ভীতু হয়ে গিয়েছিল মনে হয়। আমি যদি সঠিক সময়ে পেমেন্ট করতে না পারি। কাস্টমের পেমেন্ট না পেলে সে আমাকে পণ্য রিলিজ করতে দেবে না, আমি তো পণ্য নিতে পারবো না। তখন বন্দরে জট হবে।'
শিপিং এজেন্টরা বলছেন, এসব ব্যাংকে আর্থিক ব্যবস্থাপনা দুর্বল হওয়ায় এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা ধরনের বিধিনিষেধের কারণে বর্তমান প্রেক্ষাপটে কেউ ঝুঁকি নিতে চান না। যদি পে অর্ডার নগদায়ন সম্ভব না হয় তাহলে বিলের টাকা পাবেন না তারা। তাই আর্থিক অনিশ্চয়তায় কারণে অনেক শিপিং লাইন দুর্বল ব্যাংকের পে অর্ডার নিচ্ছে না।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, 'যারা ওইসব ব্যাংকের সাথে জড়িত এবং এছাড়াও অন্য যেসব ব্যাংক আছে এগুলো নিয়ে সবার মনে একটা আশঙ্কা আছে। তারা ভাবছে যদি ব্যাংকে টাকা না থাকে তাহলে পে অর্ডার ক্যাশ হবে কীভাবে। যেহেতু বাংলাদেশে প্রচুর ব্যাংক আছে, অন্য ব্যাংক থেকে তারা দিতে পারে। আর ব্যাপারে যদি প্রোপারলি কোনো গাইডলাইন আসে সংশ্লিষ্ট সংস্থা থেকে, তাহলে একটা আশা আছে।'
সোমবার (১৬ আগস্ট) এক প্রজ্ঞাপনে ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এই ছয়টি ব্যাংকের ঋণ বিতরণ কার্যক্রম সীমিত এবং এসব ব্যাংক থেকে এলসি খোলা নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।