টাঙ্গাইল সদরের ৪টি ইউনিয়ন পোড়াবাড়ী, কাতুলী, হুগড়া ও মাহমুদনগর। এ ৪টি ইউনিয়ন সদর উপজেলার আওতায় হলেও পিছিয়ে আছে যোগাযোগ ব্যবস্থায়।
জেলার ধলেশ্বরী নদীর পশ্চিম পাড়ের পোড়াবাড়ী ইউনিয়নের ঝিনাইচরে বৈচিত্র্যময় ফসল উৎপাদন হয়। কিন্তু, শুধু একটি সেতুর কারণে উৎপাদিত ফসল কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। তেমনিই একজন কৃষক ঠান্ডু মিয়া।
তিনি বলেন, '৮ বিঘা জমিতে কয়েক ধরনের সবজি চাষ করেছি। কম দামে সব বেচা লাগে। বেশি দাম দিতে চায় না কেউ। ১০ থেকে ১২ টাকা দামে বেচা লাগে সব। এই ব্রিজটা হলে আমরা একটু বেশি দাম পেতাম। কিন্তু, এই ব্রিজ তো হচ্ছে না।'
তার মতো ৪টি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের আক্ষেপ আছে একটি সেতুর। তবে, এ দুর্ভোগ লাঘবে ২০১৯ সালে খারজানা-কাতুলী সড়কে ধলেশ্বরী নদীতে সেতু নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয় এলজিইডি। ১২৬ মিটার ব্রিজ নির্মাণের কার্যাদেশ পায় তাহের অ্যান্ড সন্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি কাজ শেষ না করেই বিলের টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়।
এরপর ২০২২ সালে আবারও দরপত্র আহ্বান করে এলজিইডি। এতে ৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকার চুক্তিতে কার্যাদেশ পেয়ে ওই বছরের ডিসেম্বরে কাজ শুরু করে এমএফসি ও এমএনটি জেভি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এদিকে নতুন কার্যাদেশ অনুযায়ী চলতি বছরের ২৬ মে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হবার কথা থাকলেও কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৬০ শতাংশ। এছাড়া কাজ নিয়েও বিস্তর অভিযোগ আছে স্থানীয়দের।
স্থানীয় একজন বলেন, 'ব্রিজে কাজ চলছে আগে মোটামুটি কয়েকদিন। তারপর কাজ বন্ধ ছিল, এখন আবার কাজ চলতেছে। সরকার তো ব্রিজের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু আমরা কোনো সুবিধা পাচ্ছি না।'
টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহাদৎ হোসেন বলেন, 'এখন যে ঠিকাদার কাজ পেয়েছে তারা অতিদ্রুত কাজ শেষ করবে। আর মনে হয় এক বছরও লাগবে না কাজ শেষ হতে।'
তবে, অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদার প্রতিনিধি। দুর্ভোগ কমাতে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য আশ্বাস দেন।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি সোহেল রানা বলেন, 'এলজিইডি নতুন করে টেন্ডার করার পর এই কাজটা আমি পেয়েছি। এখন কাজটা অনেক সুন্দরভাবে উঠছে। নির্দিষ্ট সময়সীমার আগেই আমি এই কাজটা শেষ করতে পারবো বলে আশা করি।'
এদিকে পাঁচ বছরে দুই দফা দরপত্রের মেয়াদ শেষেও সেতুর কাজ পুরো শেষ না হওয়ার বিষয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি তিনি।
সেতুটির কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন হলে একদিকে যেমন স্থানীয়দের দুর্ভোগ লাঘব হবে। তেমনি অপরদিকে গ্রামীণ অর্থনীতিও গতি পাবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।