পুকুরে কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন সরবরাহে পানির বুদ বুদ ঘিরে বিভিন্ন জাতের রঙিন মাছ খেলা করে। লাভজনক হওয়ায় শরীয়তপুরের নড়িয়ার ডিঙ্গামানিক গ্রামে বাড়ছে রঙিন মাছের হ্যাচারির সংখ্যা।
আগে অন্যের হ্যাচারিতে কাজ করলেও ২০০৬ সালে ছোট দু'টি চৌবাচ্চা দিয়ে রঙিন জাতের মাছের চাষ শুরু করেন বাসুদেব নামের একজন ব্যবসায়ী। এরপর আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একে একে গড়ে তোলেন ৪০টি চৌবাচ্চা। ব্রিডিং ছাড়াও মাছ বড় করতে শুরু করেন পুকুরে চাষ। এখন পুকুর আর হ্যাচারি মিলিয়ে বাসু দাসের সংগ্রহে রয়েছে গোল্ডফিস, অ্যাঞ্জেল ফিসসহ ১২ জাতের প্রায় কয়েক লাখ মাছ।
তিনি বলেন, 'অনেকেই মাছ বাহিরে থেকে আনতো। তখন ভাবলাম দেশেই আমি এটা করবো। তখন কাটাবন থেকে মাছ এনে চাষ শুরু করি। আর এখন ব্যবসা অনেক ভালো চলছে।'
বাসুদেবের এ উদ্যোগ সাড়া ফেলেছে স্থানীয়দের মাঝেও। অনেকে তাকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অন্তত ১০০ নতুন উদ্যোক্তাকে দিয়েছেন প্রশিক্ষণ আর মাছের রেনু। তাদের একজন জহিরুল ইসলাম। যিনি গড়ে তুলেছেন ১৯টি চৌবাচ্চা আর একটি পুকুর। তার অধিকাংশ মাছ বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে।
তিনি বলেন, 'এখন আমার অনলাইনে ব্যাপক বেচাকেনা হচ্ছে। মানুষের চাহিদা অনেক। তাই সবাইকে মাছ দিতে পারছি না। ব্যবসা বড় করার চিন্তা করছি। পুকুরে চাষ করতে পারলে আরও ভালো।'
শরীয়তপুরে দিন দিন যেমন রঙিন মাছের খামার গড়ে উঠছে এসব মাছ বিক্রিকে ঘিরে গড়ে উঠছে বিভিন্ন বাজারে এরকম ছোট ছোট দোকান। যেসব দোকানে বিক্রি হচ্ছে এমন রঙিন মাছসহ বিভিন্ন উপকরণ।
রঙিন মাছ বিক্রির জন্য জেলায় গড়ে উঠেছে ছোট বড় অন্তত ১০টি বিক্রয়কেন্দ্র বা ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান। তৈরি হয়েছে নতুন কর্মসংস্থানের। ব্যবসায়ীরা বলছেন, জেলায় দিন দিন রঙিন মাছের চাহিদা বাড়ছে, সাথে বাড়ছে লাভের পরিমাণ।
রঙিন মাছচাষেও আগ্রহীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহায়তার আশ্বাস উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাকির হোসেন মৃধা।
তিনি বলেন, 'প্রবাসী এলাকা হওয়ায় রঙিন মাছের প্রতি সবার আগ্রহ আছে। দিন দিন এটার চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরাও চাষিদেরকে উৎসাহ দিচ্ছি। আশা করি সামনে রঙিন মাছের চাষ আরও বাড়বে।'
বর্তমানে শরীয়তপুরে ৪টি হ্যাচারিতে উৎপাদন হচ্ছে রঙিন মাছের। আর এ কাজে জড়িত শতাধিক বেকার ও তরুণ।