টানা তৃতীয়বারে মতো সরকার গঠনের পর শপথ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকার প্রধানকে আমন্ত্রণ জানান ভারতের নবনির্বাচিত সরকার প্রধান।
সেই সফরের ১০ দিন পর এবার দেশটির আমন্ত্রণে দু'দিনের দ্বিপক্ষীয় সফর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর। তবে এ যাত্রায় দুদেশের নতুন সরকারের সুসম্পর্কর দিকটিই দৃশ্যমান হচ্ছে বলে মত কুটনীতিকদের।
সাবেক কূটনীতিক এম হুমায়ুন কবির বলেন, 'দুইটা সফর কাছাকাছি সময়ে হচ্ছে বলে আমাদের চোখে লাগছে কিন্তু দুইটা সফরের চরিত্র ভিন্ন। নতুন সরকার, দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ এইটা একটা কূটনৈতিক বিষয়।'
এবারের সফরে দুদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। যেখানে গুরুত্ব পাবে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, যোগাযোগ ও জ্বালানিসহ নানা বিষয়। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন চুক্তি, সীমান্ত হত্যা পুরোপুরি বন্ধের মতো বিষয়গুলো আলোচনায় তুলবে বাংলাদেশ।
বছরে ভারতের সঙ্গে ১৪ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হলেও মাত্র ২ বিলিয়ন ডলারে পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে ভারতের বাজারে বাণিজ্য প্রসারে দেশটির নীতি সহায়তার বিষয়টিও আলোচনায় আসার দাবি রাখে।
হুমায়ুন কবির বলেন, 'নতুন বিষয়ে ঝাপিয়ে না পড়ে আগের যে চুক্তিগুলো রয়েছে সেগুলোতে এখনকার প্রেক্ষাপটে নজর দেয়া জরুরি।'
তবে এ সফরের সবচেয়ে আলোচনায় তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প। ২০১১ সাল থেকে তিস্তা নদীর পানি বন্টন নিয়ে ভারতের সাথে দেনদরবার করেও সুফল মেলেনি। তখন বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসে চীন। বলা হয়, বাংলাদেশ অংশে একটি বহুমুখী ব্যারেজ নির্মাণের মাধ্যমে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কমবে, পাশাপশি শত শত একর জমি পুনরুদ্ধার হবে যা কাজে লাগানো যাবে কৃষি কিংবা শিল্পায়নে।
দ্বাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ২৮ জানুয়ারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। সাক্ষাৎ শেষে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ চাইলে তিস্তা প্রকল্পের কাজ শুরুর বিষয়ে তৈরি আছে চীন।'
তবে গত মাসে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কুমার কোয়াত্রা ঢাকা সফরে জানান, তিস্তা প্রকল্পে অর্থায়ন করতে চায় ভারত।
আন্তর্জাতিক বিশ্লষকদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত। তাই বন্ধু রাষ্ট্র বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে দেশটি। তবে অতীত অভিজ্ঞতা ও প্রকল্প বাস্তবায়নে সক্ষমতার বিষয়টি ভাবার পরামর্শ তাদের।
তবে নতুন দুই সরকার প্রধানের রাজনৈতিক ইচ্ছা এগিয়ে নিতে পারে প্রতিবেশি দেশ দুটির সম্পর্কের উষ্ণতা।