দেশের রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশ আসে পোশাকখাত থেকে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত এই পরিমাণ ৪ হাজার ৩৮৫ কোটি ডলার।
পোশাক তৈরিতে যে কাপড় নষ্ট হয় তাকে সাধারণত ঝুট বলা হয়। আর দেশে এই ঝুট উৎপাদনের পরিমাণ ২০১৯ সালে ছিল ৫ লাখ ৭৭ হাজার টন। এর মধ্যে ২ লাখ ৫০ হাজার টনই শতভাগ সুতার তৈরি। এছাড়া এ থেকে যে বর্জ্য উৎপাদন হয় তার পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ৩০ হাজার টন। যেখানে কাপড় তৈরিতে প্রতি বছর সুতা আমদানি করা হয় ৩৫০ কোটি ডলারের ।
প্রতি বছর সুতার শতভাগ বর্জ্য রপ্তানি করা হলে ১০০ মিলিয়ন ডলার আয় হওয়ার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সেই সাথে নষ্ট হওয়া সুতা রিসাইকেল করা হলে ১৫ শতাংশ আমদানি কমার আশা। এতে বাঁচবে অন্তত ৫০ কোটি ডলার। এছাড়া বর্তমানে যে ঝুট উৎপাদন হয়, তা পুনর্ব্যবহার করে রপ্তানি করা হলে বছরে ৩শ' কোটি টাকার ডলার আয় করা সম্ভব বলেও ধারণা ব্যবসায়ীদের।
পুনরায় ব্যবহার যোগ্য সুতা ও কাপড় তৈরির এত সম্ভাবনা থাকলেও তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। চাহিদার বিপরীতে ঝুট উৎপাদন হয় ২৫ শতাংশের কম। এমন বাস্তবতায় মঙ্গলবার ( ১১ জুন) পোশাক খাতের রিসাইকেল অর্থনীতি বিষয়ক এক সামিটে উঠে আসে সমস্যা ও সমাধানের নানা প্রসঙ্গ।
বাংলাদেশে বর্তমানে সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকলেও এর সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধিরা।
এসময়, ঝুট পুনর্ব্যবহারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে, পোশাক খাতের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পণ্যের দাম বাড়াতে বায়ারদের অনুরোধ জানান বিজিএমইএ'র সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।
পোশাক খাতের ঝুটের পুনর্ব্যবহারের সুযোগ আর সম্ভাবনার কথা শোনা গেল বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের বক্তব্যেও। বলছে, রপ্তানি আয় বাড়াতে গুরুত্ব দেয়া হবে এ বিষয়ে।
বিশ্বের অনেক দেশ পোশাক খাতে রিসাইকেল শুরু করায় সুতা উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছে। এতে ভবিষ্যতে সুতার পরিবর্তে করতে হবে ঝুট আমদানি। তাই শিগগিরই এর অনুমতি না পেলে পোশাকের কাঁচামাল সংকট দেখা দেয়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।