মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

হামাসের হাতে জিম্মি আরও ৪ জনের প্রাণহানি

গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে গোটা বিশ্ব যখন সোচ্চার, তখন হামাসের হাতে জিম্মি আরও ৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে ইসরাইল। মরদেহগুলো এখন হামাসের জিম্মায় আছে। এদিকে প্রায় আট মাস ধরে গাজায় চলমান ইসরাইলি হামলায় সেখানকার অর্ধেকের বেশি বেসামরিক স্থাপনা ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ।

মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবির। বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাটিতে এখন নেই কোনো কোলাহল, মানুষের চলাফেরা।

অন্যান্য এলাকা থেকে আশ্রয়ের খোঁজে জাবালিয়ায় এসে একেবারে হতভম্ব বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা। একের পর এক হামলায় পালটে গেছে পুরো শহরের চেহারা। ধ্বংসস্তূপ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংগ্রহ করছেন স্থানীয়রা।

গাজার একজন বাসিন্দা বলেন, 'গোলাগুলি আর বোমা হামলার মধ্যেই প্রাণ নিয়ে পালিয়ে এসেছি। যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ দেখছি না। পালানো ছাড়া আর উপায় নেই। ১৫ দিন ধরে লুকিয়ে ছিলাম। ফিরে এসে জায়গাটা আর চিনতেই পারছি না।'

এদিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে ইসরাইলি সেনাদের অভিযানে হামাসের হাতে জিম্মি ৪ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই চার ব্যক্তির পরিচয় জানা গেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবনা দেয়ার পর থেকে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে ইসরাইলি সরকারকে চাপ দিচ্ছিলো জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা। চার জিম্মির মৃত্যুর খবরে আবারও উত্তপ্ত তেল আবিব। খাঁচায় বন্দি হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সামনে প্রতীকী বিক্ষোভ করেন ক্ষুব্ধ ইসরাইলি নাগরিকরা।

এক ইহুদি বিক্ষোভকারী বলেন, 'ভীষণ খারাপ লাগছে। মনে হচ্ছে আমার পরিবারের কোনো সদস্য নিহত হয়েছে। একটা খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। জিম্মিদের প্রাণহানি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। সমঝোতা প্রস্তাবে রাজি না হলে কেউই প্রাণ নিয়ে ফিরবে না।'

অন্যদিকে ইসরাইলের শর্ত বিবেচনায় রেখে হামাসের কাছে যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে তার ওপরই গাজা যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

মিশর ও কাতারকে সাথে নিয়ে প্রস্তাবনাটি কার্যকর করার আশ্বাস দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।

তিনি বলেন, 'আমরা শতভাগ আত্মবিশ্বাসী। প্রস্তাব ইসরাইলের পক্ষ থেকেই এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশর পরামর্শদাতার ভূমিকা পালন করেছে। বৃহস্পতিবার হামাসের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। হামাসের ওপর বাকিটা নির্ভর করছে।'

এদিকে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের ঘোষণা না আসলে গোটা উপত্যকার সামাজিক, রাজনৈতিক কাঠামো ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। বিশেষ করে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার ভঙ্গুর দশা যুদ্ধ পরবর্তী গাজার শাসন ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এমন অভিমত বিশেষজ্ঞদের।

বেসামরিক নাগরিক ও বিভিন্ন সংগঠনে জড়িত কর্মীদের জন্য গাজায় টিকে থাকা আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। স্থান সংকুলান হচ্ছে না। খান ইউনিস থেকে দিয়ের-আল-বালাহ পৌঁছাতে ১০-১৫ মিনিটের বদলে ঘণ্টাখানেক সময় লাগছে। সব জায়গায় মানুষের ভিড়। কোথাও যাওয়ার উপায় নেই।