এশিয়া
বিদেশে এখন

পাকিস্তানে বাড়ছে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা

চরম গরমে অতিষ্ঠ হয়ে আছে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল। ভারতে গরমে অসুস্থ হয়ে প্রাণহানি এরই মধ্যে ১০০ ছাড়িয়েছে। দেশের বড় অংশে তাপপ্রবাহের মধ্যে আজই পাঞ্জাব-হরিয়ানায় দাবদাহ গুরুতর রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাকিস্তানে শুধু লাহোরে সরকারি হাসপাতালেই ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ৭২ জন। নজিরবিহীন এমন দাবদাহের জন্য খামখেয়ালি আবহাওয়াকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাবিহীন দূরপাল্লার বাসের যাত্রীদের ভোগান্তির সীমা ছাড়িয়েছে পাকিস্তানে। দেশজুড়ে চলমান দাবদাহের মধ্যে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দু'দিন লাহোরে তাপমাত্রার পারদ ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। গেলো সপ্তাহে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৫২ দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় সিন্ধু প্রদেশে।

একজন বাসযাত্রী বলেন, 'জানালা খোলা থাকায় কিছু বাতাস ঢুকছে বাসে। পানি খেয়ে শরীর ঠাণ্ডা রাখার চেষ্টা করছি। এসি বাসে যাতায়াতের সামর্থ্য নেই আমার। তাই গরমে কষ্ট হলেও সহ্য করতে হচ্ছে।'

পাঞ্জাবের প্রাদেশিক রাজধানী লাহোরের হাসপাতালগুলোতে হিটস্ট্রোকের রোগী বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ২৪ ঘণ্টায় শুধু কয়েকটি সরকারি হাসপাতালেই ৭২ জনকে ভর্তির কথা জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডন। উচ্চ তাপমাত্রা আর শুষ্ক বাতাসে প্রদেশটিতে দাবানলও ছড়িয়ে পড়ছে বেশ কয়েক জায়গায়। প্রতিবেশি দেশ ভারতেও বিভিন্ন প্রদেশে গেলো দু'তিনদিনেই গরমজনিত অসুস্থতায় মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। দিল্লি, মধ্য প্রদেশ, ছত্তিশগড়, বিহার, ওড়িষা, উত্তরাখান্ড, ঝাড়খান্ড, রাজস্থানসহ ভারতের বড় অংশের ওপর দিয়ে বইছে তাপপ্রবাহ। বিশেষ করে পাঞ্জাব আর হরিয়ানায় রোববারই দাবদাহ তীব্র রূপ নেবে বলে সতর্ক করেছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ।

গেলো মাসে ১০টির বেশি তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ওপর দিয়ে। চলতি মাসও ব্যতিক্রম হবে না, বলছেন আবহাওয়াবিদরা। সংখ্যার সাথে স্থায়িত্ব আর গরমের তীব্রতাও বাড়ছে। নজিরবিহীন দাবদাহ পরিস্থিতির জন্য খামখেয়ালি আবহাওয়াকে দায়ী করছেন প্রবিশেষজ্ঞরা।

ভারতের আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ড. গুফরান বেগ বলেন, 'সাধারণত তিন থেকে চার বছরে একবার করে লা নিনা আর এল নিনো আবহাওয়া পরিস্থিতি দেখা যায়। কিন্তু গত চার বছর ধরে লা নিনা, এল নিনো, লা নিনা- একটার পর একটা চলছেই। এই দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিই বিপর্যয় ডেকে আনছে, পরিবেশ ভারসাম্য হারাচ্ছে।'

প্রশান্ত মহাসাগর উষ্ণ হয়ে উঠলে এল নিনো আবহাওয়া পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, যার ফলে ভারতীয় উপমহাদেশ শুষ্ক হয়ে ওঠে। অন্যদিকে প্রশান্ত মহাসাগরে শীতল তাপমাত্রায় দেখা দেয় লা নিনা। এল নিনো থেকে লা নিনায় পরিবর্তনকালে বিরূপ আবহাওয়ার কবলে পড়ে এশিয়ার কয়েকশ' কোটি বাসিন্দা।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর