ইউরোপ
বিদেশে এখন

রুশ কারিকুলামে আবারও সামরিক প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্ত

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর আবারও স্কুল শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রমে যোগ করা হয়েছে সামরিক প্রশিক্ষণের নানা বিষয়। অস্ত্র চালনা, সমরাস্ত্র বহন, আত্মরক্ষাসহ প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার কৌশল শিখছে শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থা চলতে থাকলে শিক্ষার্থীরা উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা হারিয়ে ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ক্ষুদে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের হাতে দেখা যায় পিস্তল। ক্লাস চলছে ঠিকই তবে তা ক্লাসরুমে নয়, ফায়ারিং স্কোয়াডে। রাশিয়া প্রজাতন্ত্রের ওসেসিয়া-অ্যালাইনার ভ্লাডিকভকাস অঞ্চলে স্কুল শিক্ষার্থীদের ছোটখাটো আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন অঞ্চলটির সেনাসদস্যরা। পাশাপাশি তাদের শেখানো হচ্ছে সেনাবাহিনীতে কাজ করার সহজ পাঠ।

একজন শিক্ষার্থী বলেন, 'পিস্তলের সাহায্যে গুলি চালানো বেশি সহজ। 'ক্যালাসনিকভ' রাইফেল দিয়ে লক্ষ্যভেদ করা আমাদের জন্য বেশ কঠিন। অ্যাসল্ট রাইফেল এবং পিস্তল দু'টো অস্ত্রই চালাতে শিখেছি। সামরিক প্রশিক্ষণ ও শরীরচর্চা জীবনকে অনেক সহজ করে তোলে।'

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রজাতন্ত্রের স্কুলগুলোর কারিকুলামে সামরিক প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে অস্ত্র চালানোর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল। ইউনিয়ন ভেঙে গেলে পাঠক্রম থেকে প্রশিক্ষণের অংশটি বাদ দেয়া হয়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন রাশিয়া সংঘাত শুরুর পর আবারও স্কুলের পাঠ্যক্রমে যোগ করা হয়েছে সামরিক প্রশিক্ষণ।

পাঠ্যক্রমে সামরিক প্রশিক্ষণের বিষয়টি আবারও অন্তর্ভূক্ত করার পরপরই সমালোচকদের প্রশ্নের মুখে পড়েছে রুশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একটি সমাজকে সামরিকীকরণ করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা থেকে দূরে সরে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। তবে সামরিক কর্তারা বলছেন এ ধরণের প্রশিক্ষণ তরুণদের আরও বেশি সংঘবদ্ধ করবে।

নর্থ ওসেসিয়া প্রজাতন্ত্রের প্রধান নেতা সার্গেই ম্যানিয়াইলো বলেন, 'ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর থেকে অনেকেই বুঝতে পারছে সেনাবাহিনীর বিশেষ কিছু আত্মরক্ষার কৌশল জানা থাকলে জীবনধারণ সহজ হয়। শিক্ষার্থীরা যেন প্রতিকূল পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে পারে, এখানে তাদের সেই প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। আত্মরক্ষার জন্য যদি যুদ্ধও করতে হয়, তারা সেনাবাহিনীর মতো একজোট হয়ে শত্রুর আঘাত প্রতিহত করতে পারবে।'

শিক্ষার্থীদের একজন প্রশিক্ষক বলেন, 'আমরা সকলেই ক্রকাস সিটি হলের সহিংসতা দেখেছি। আচমকা গুলির শব্দে যে কেউ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে। তবে, প্রশিক্ষণ নেয়া থাকলে এ ধরণের পরিস্থিতি মোকাবিলা সহজ হয়। কারণ গোলাগুলির শব্দ তার জন্য নতুন কোনো অভিজ্ঞতা নয়।'

রাইফেলে কার্তুজ ভরা, ভারী সমরাস্ত্র বহন করার পাশাপাশি আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার নানা দিকও শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে শেখাচ্ছেন প্রশিক্ষকরা। সেনা সদস্যদের প্রাথমিকভাবে যেসব প্রশিক্ষণ নিতে হয় তা ভালোভাবে আয়ত্ত করতে পারলে তা আজীবন কাজে আসবে এমনটাই দাবি করছেন প্রশিক্ষকরা।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর