উপকূলসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি জেলায় তাণ্ডব চালায় রিমাল। ঝড়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ঝালকাঠি, চাঁদপুর, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও কক্সবাজার জেলা।
এর মধ্যে সাতক্ষীরায় বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিবন্দি হয়ে পড়েন বেশ কয়েকটি এলাকার হাজার হাজার মানুষ। গাছপড়ে বিধ্বস্ত হয় ঘরবাড়ি। বন্ধ হয়ে যায় সড়ক যোগাযোগ। প্রাণহানি ঘটার পাশাপাশি তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়।
ঘূর্ণিঝড়ে বাগেরহাটের শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জে অনেক গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। একতলা পরিমাণ পানিতে ডুবে গেছে রায়েন্দা বাজার ও চালতা বুনিয়ার আশপাশ।
এদিকে নোয়াখালীতে ঝড়ো বাতাসসহ মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। ভাটার সময় হলে নদীর পানি বৃদ্ধি ও নতুন করে আরও কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদির পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৭ থেকে ৮ ফুট বেড়েছে। যা বিপদ সিমার ৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উপকূলীয় জেলা ভোলায় লালমোহনে পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে ঘরের নিচে চাপা পড়ে মনেজা খাতুন নামে একজনের মৃত্যু।
ফরিদপুরে বৃষ্টির পাশাপাশি দমকা হওয়া শুরু হয়েছে। কয়েকটি উপজেলা এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
রাত ২টায় প্রকাশিত আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৬ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাত ৯টায় রিমাল চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০০ কিলোমিটার পশ্চিম, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০৫ কিলোমিটার পশ্চিম, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিম এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর দিকে ধীরগতিতে অগ্রসর হয়ে মোংলার দক্ষিণপশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করছে।
দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান বলেন, 'ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সকল জিনিস আমরা পৌঁছে দিয়েছি। বাড়তি চাহিদা অনুযায়ী সামগ্রী পৌঁছে দিতে আমাদের দুযোর্গ মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।'
দুর্যোগ থেকে রক্ষায় মাঠে কাজ করে কোস্টগার্ড, রেড ক্রিসেন্ট, সিপিপিসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা। হতাহতদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। সড়ক ও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কাজ করেন তারা।